লিজ ট্রাস এবং ঋষি সুনক।
এক মাস আগেও নেটমাধ্যমে ভিডিয়ো পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, ঋষি সুনকই তাঁর পছন্দের প্রার্থী। মাস ঘুরতে না ঘুরতে শনিবার সেই তিনিই জানিয়ে দিলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর সমর্থন থাকছে লিজ ট্রাসের দিকেই। কথা হচ্ছে ইংল্যান্ডের বরিস-মন্ত্রিসভার প্রবীণ মন্ত্রী স্যার রবার্ট বাকল্যান্ডকে নিয়ে। তাঁকে নিয়ে এখন জোর চর্চা চলছে সে দেশের গণমাধ্যমে। কারণ তিনিই ব্রিটেনের রাজনীতির প্রথম উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি সুনক শিবিরের থেকে সমর্থন সরিয়ে ট্রাসকে সমর্থন জানালেন।
প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে রয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির দুই শীর্ষনেতা ঋষি সুনক এবং লিজ ট্রাস। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর জানা যাবে বরিস জনসনের উত্তরসূরি হিসাবে কে ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা হতে চলেছেন। আপাতত যুযুধান দুই প্রার্থী বিভিন্ন বিতর্কসভায় নিজেদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি, পরিকল্পনার কথা তুলে ধরছেন।
বাকল্যান্ড তাঁর পক্ষ বদলের সমর্থনে বলেছেন, “আমি প্রথমে সুনককে সমর্থন জানাব ভেবেছিলাম। কারণ হিসাবে মনে হয়েছিল, সুনকই আমাদের প্রয়োজনীয়তাগুলি সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন। কিন্তু বিতর্কসভায় দুই প্রার্থীর বক্তব্য মন দিয়ে শোনার পর মনে হল, দেশের সমৃদ্ধি এবং অর্থনীতির উন্নতির জন্য ট্রাসই যোগ্যতম ব্যক্তি।” বাকল্যান্ড এ-ও জানিয়েছেন যে, মত বদল করা সহজ কাজ না হলেও তিনি দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য ট্রাসকে সমর্থন জানাচ্ছেন। তবে বরিস মন্ত্রিসভার দুই সদস্যই যে অভিজ্ঞ রাজনীতিক, তা নিয়ে তাঁর কোনও দ্বিমত নেই বলে জানিয়েছেন বাকল্যান্ড।
এই পক্ষ বদলের মধ্যে স্বার্থের গন্ধও পাচ্ছেন রাজনীতির কারবারিদের কেউ কেউ। সাম্প্রতিক কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সুনককে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছেন ট্রাস। সম্ভাব্য জয়ী প্রার্থীর সমর্থনে থাকলে মন্ত্রিসভায় পছন্দের মন্ত্রক পাওয়া যেতে পারে, এই অঙ্ক মাথায় রেখে এগোতে চাইছেন অনেকেই। ট্রাসের দিকে সমর্থনের পাল্লা ঝুঁকছে দেখে সুনকের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন ব্রিটেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাব। রাবের দাবি, ট্রাসের অধিকাংশ প্রতিশ্রুতির মধ্যেই অস্পষ্টতা আছে। তাই অর্থনৈতিক নীতির প্রশ্নে ট্রাস বারবার অবস্থান বদল করলেও, সুনক নিজের অবস্থানে অটল রয়েছেন।
বাকল্যান্ড অবশ্য জানিয়েছেন, পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি ব্যক্তিত্ব নয়, দুই নেতার ভবিষ্যৎ নীতির উপর বেশি জোর দিয়েছেন। বাকল্যান্ডের পথ অনুসরণ করে অন্য ওজনদাররাও ট্রাস শিবিরে গিয়ে ভেড়েন, নাকি তাঁরা সুনকেই আস্থা জ্ঞাপন করেন, সেটাই এখন দেখার।