নুর ইনায়েত খান ও ব্রিটনে তাঁর মূর্তি। ছবি: সংগৄহীত
এক জন ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ গোয়েন্দা। অন্য জন ভারতীয় বংশোদ্ভুত হয়েও ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির সদস্য প্রথম ভারতীয় হিসেবে পেয়েছিলেন বীরত্বের পুরস্কার। শুধু এই দু’জনই নয়, সম্প্রীতির বার্তা দিতে ব্রিটেনের কয়েনে এ বার স্থান পেতে চলেছেন ভারত-সহ এশিয়া ও বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিখ্যাতরা। কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য ভারতীয় বংশোদ্ভুত জেহরা জাইদার প্রস্তাব পাওয়ার পর তা খতিয়ে দেখেছেন ভারতীয় বংশোদদ্ভুত ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক। ইতিমধ্যেই টাঁকশালেও খসড়া পরিকল্পনা পাঠিয়েছে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রক। প্রযুক্তি ও নকশা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে পর্যালোচনা করছেন টাঁকশালের আধিকারিকরা।
বেশ কিছু দিন ধরেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রচার চালাচ্ছে ব্রিটেনের শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টি। বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয়, মুসলিম-সহ বিশ্বের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সামনের সারিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। এই কর্মসূচির উদ্যোক্তা মূলত দু’জন– ঋষি সুনক এবং জেহরা জাইদা। জাইদা একটি চিঠি লিখে এই প্রস্তাব পাঠান অর্থমন্ত্রী সুনককে। তার পরেই ব্রিটিশ কয়েনে অব্রিটিশদের মুখ ছাপানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।
জেহরা জাইদা বলেছেন, ‘‘এশীয় এবং অন্যান্য সম্প্রদায়গত সংখ্যালঘু, যাঁরা দেশের জন্য বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিতে বিশেষ থিমের প্রস্তাব দিয়েছি। এই থিম মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করবে। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন গোটা দেশ একটা অতিমারির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের সংখ্যালঘু স্বাস্থ্যকর্মীরা বীরের মতো লড়াই করছেন।’’
আরও পড়ুন: ‘বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তান’, নাম করেই মন কি বাত-এ আক্রমণ মোদীর
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের গোয়েন্দা ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত নুর ইনায়াত খান। ওই সময়ই তিনি নাৎসি বাহিনীর হাতে নিহত হন। অন্য দিকে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির সদস্য হিসেবে আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভুত খুদাবাদ খান পেয়েছিলেন ‘ভিক্টোরিয়া ক্রস’ সম্মান। তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে সম্মান পেয়েছিলেন। বীরত্বের জন্য কমনওয়েল্থ ও ব্রিটেনের সেনাকে এই পুরস্কার দেয় ব্রিটিশ সরকার। নতুন কয়েনে দু’জনের মুখ থাকা প্রায় নিশ্চিত বলেই ব্রিটিশ সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে একটি ভারতীয় দৈনিক।
আরও পড়ুন: আনলক-৩: অগস্ট থেকে খুলতে পারে সিনেমা হল, মেট্রোর দরজা বন্ধই
জেহরা জাইদ তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবদানকে স্বীকৄতি দেওয়ার আরও একটা সুযোগ হারানো উচিত নয়।’’ এই প্রস্তাবকে সমর্থন করার জন্য (ঋষি সুনক) আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। ঋষি সুনক নিজে অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে ওই দৈনিককে ব্রিটেনের ট্রেজারি মন্ত্রী জন গ্লেন বলেছেন, সুনক এই সময়োপযোগী প্রস্তাব সমর্থন করতে অত্যন্ত আগ্রহী। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা অবশ্যই এই প্রস্তাবকে সমর্থন করি এবং এ বিষয়ে সদর্থক মনোভাবই রয়েছে আমাদের। তবে টাঁকশাল থেকে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রস্তাব আসার অপেক্ষায় রয়েছি।’’