বিশ্বের সেরা পঞ্চাশটি হোটেলের তালিকা প্রকাশ করেছে ভ্রমণ-পত্রিকা ‘কঁদে নাস্ত’। পাঠকদের মতামত ও পছন্দ অনুযায়ী এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রথম দশটি হোটেলের মধ্যে স্থান পেয়েছে দু’টি ভারতীয় হোটেল।
দশ নম্বরে আছে লাওসের হোটেল ‘রোজউড’। লাওসের প্রাচীন রাজধানী ছিল লুয়াং প্রবাং। মেকং ও নাম খান নদীর সঙ্গমস্থলে লুয়াং প্রবাং-এর বৈশিষ্ট্য হল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে রাজকীয় ঐতিহ্য।
ভ্রমণপিপাসুদের মতে, লুয়াং প্রবাং-এর আকর্ষণ অনেকটা সমারসেট মম-এর ছোটগল্পের মতো। বৌদ্ধধর্মে আগ্রহীদের মন টানে স্থানীয় বৌদ্ধ মঠগুলি। মূল শহরের বাইরে প্রকৃতির কোলে আছে রোজউড হোটেল। প্রকৃতির কোলে তৈরি অভিজাত ও বিলাসবহুল এই হোটেলের বৈশিষ্ট্য কাঠের অন্দরসজ্জা।
ন’নম্বর স্থান পেয়েছে সুইৎজারল্যান্ডের লুসান শহরের ‘বো রিভাজ প্যালেস’। লেক জেনিভার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকা এই হোটেল সত্যিই যেন রাজপ্রাসাদ। পর্যটকদের মতে, এর সবথেকে আকর্ষণীয় অংশ হল বাগান।
তালিকার আট নম্বরে আছে ইতালির ‘মোনাস্তেরো সান্তা রোসা হোটেল অ্যান্ড স্পা’। ইতালির বিখ্যাত আমালফি উপকূল থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে এই হোটেল বিখ্যাত ভূমধ্যসাগরের রূপ কাছে পাওয়ার জন্য। এই হোটেলে ঘর মাত্র ২০টি। অভিনব হল, অন্যান্য সুযোগের সঙ্গে এখানে আছে একটি লাইব্রেরি।
রাজস্থানের জয়পুরের রামবাগ প্যালেস পেয়েছে তালিকার সাত নম্বর স্থান। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও সত্যি, ১৮৩৫ সালে তৈরি এই প্রাসাদ কাজে লাগানো হত শিকারমহল হিসেবে। সেটাই এখন তাজ গোষ্ঠীর হোটেল।
মরক্কোর মারাকেশের রয়্যাল মানসৌর হোটেল আছে ছ’নম্বরে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে বারোশো কারিগর তৈরি করেছিলেন এই হোটেল। প্রতিটি ঘরের সঙ্গে আছে আলাদা কোর্টইয়ার্ড। বৃষ্টি পড়লে নিজে থেকেই মাথার উপর বিছিয়ে যায় চাঁদোয়া। রেশমি কাপড়ে ঢাকা দেওয়ালে ঘেরা ঘর। রেস্তোরাঁয় রয়েছেন বিশ্বমানের শেফ।
মায়ামি সৈকতের ফোর সিজনস হোটেল প্রিয় গন্তব্য সার্ফিংমোদী পর্যটকদের কাছে। ১২ তলা উঁচু এই হোটেল আছে তালিকার পাঁচ নম্বরে। উইনস্টন চার্চিল থেকে এলিজাবেথ টেলর— বরাবরই এই হোটেল প্রিয় বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের কাছে।
হোটেল ওয়েস্ট হলিউডের সাজসজ্জার প্রধান উপকরণ সবুজ গাছপালা। সেরা হোটেলের তালিকার চার নম্বরে থাকা এই অতিথি নিবাস একেবারেই প্রকৃতিবন্ধু।
উদয়পুরের তৎকালীন যুবরাজ মহারানা জগৎ সিংহের জন্য ১৭৪৬ সালে তৈরি হয়েছিল পিছোলা হ্রদের উপরে এক সুদৃশ্য প্রাসাদ। আজ সেটি বিশ্বের সেরা হোটেলের তালিকায় তিন নম্বরে। ৬৫টি ঘর এবং ১৮ স্যুটের এই হোটেলর প্রায় সম্পূ্র্ণটাই সাজানো রাজস্থানি হস্তশিল্পে। হোটেল থেকে শহরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের জন্য মজুত থাকে ভিন্টেজ গাড়ি।
১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে পথ চলা শুরু করেছিল সুইৎজারল্যান্ডের জুরিখ শহরের বোর-ও-লাক হোটেল। এবং এখনও অবধি এর মালিকানা রয়েছে একই পরিবারের হাতে। জুরিখ হ্রদ এবং আল্পস পর্বতমালার অপূর্ব সৌন্দর্যের ডালি এই হোটেল থেকে যেন চলে আসে হাতের মুঠোয়। বিশ্বের সেরা হোটেলের তালিকায় তার স্থান দু’নম্বরে।
ভ্রমণ-পত্রিকা ‘কঁদে নাস্ত’ প্রকাশিত তালিকায় বিশ্বের সেরা হোটেল বলে বিবেচিত হয়েছে আমেরিকার অভিজাত বেভারলি হিলস-এর এসএলএস হোটেল। আধুনিক সজ্জার সঙ্গে মূল আকর্ষণ এর রেস্তোরাঁ। রন্ধনশিল্পী জোসে আন্দ্রিজের কল্যাণে এই হোটেল দুনিয়ার সেরা ভোজনবিলাসীদের অন্যতম পীঠস্থান হয়ে উঠেছে। হোটেল থেকে দু’ মাইল দূরত্বের মধ্যে যাতায়াতের জন্য রয়েছে কমপ্লিমেন্টারি গাড়ির ব্যবস্থা।