ফাইল চিত্র।
মনিটরের এ পারে বসে প্রেসিডেন্ট ‘স্যর’। ও পার থেকে যন্ত্রের ভিতর দিয়ে ভেসে আসছে ধারাবিবরণী। যেন ভিডিয়োগেম চলছে। ও পারের সেনা কণ্ঠ জানাল, ‘‘ওরা একসঙ্গে আছে স্যর। ওদের হাতে আর মাত্র ২ মিনিট ১১ সেকেন্ড রয়েছে। ওরা সাঁজোয়া গাড়ির ভিতরে বসে। বাঁচার জন্য আর ১ মিনিট বাকি। ৩০ সেকেন্ড, ১০, ৯, ৮...। তার পর জোরালো একটা শব্দ— বুম!’’ সেনা কণ্ঠ জানাল, টার্গেট শেষ। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সংযোগ। বাগদাদে ইরানের সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যা করার অন্তিম মুহূর্তগুলি এ ভাবেই বর্ণনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জনসমক্ষে এই প্রথম বার!
শুক্রবার রাতে ফ্লরিডায় প্রেসিডেন্টের মার-এ-লাগো ক্লাবে নির্বাচনী প্রচারে অর্থ সংগ্রহের জন্য একটি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন রিপাবলিকানরা। সেখানে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ৩ জানুয়ারি কী ভাবে সোলেমানিকে হত্যা করেছিল মার্কিন সেনা। দাবি করেছেন, আমেরিকায় বসে সে দিন পুরো ঘটনার উপরে তিনি নজর রেখেছিলেন। ফ্লরিডার ভোজসভায় সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না। তবু শনিবার একটি মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে এই সংক্রান্ত একটি অডিয়ো ক্লিপিং ছড়িয়ে পড়ে। তাতে ট্রাম্প সোলেমানি-হত্যার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ও (সোলেমানি) আমাদের দেশ নিয়ে খারাপ কথা বলত। বলত, আমাদের দেশকে আক্রমণ করবে। মার্কিনদের হত্যা করবে। এ সব আর কত দিন সহ্য করা যায় বলুন?’’
ইরানি সেনাপ্রধানকে হত্যার কথা কবুল করার পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঢেউ উঠেছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ডেমোক্র্যাটরাও। তবে প্রেসিডেন্ট যে এ সব গায়ে মাখেন না তা এ দিন তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পরে প্রায় দু’সপ্তাহ চুপ করে থাকলেও সে দিন প্রথম মুখ খুলেছেন তিনি। হামলার খুঁটিনাটি বিবরণ দিয়েছেন অতিথিদের কাছে।
সোলেমানি-হত্যাকাণ্ড যে ‘বিশ্বের সাড়া জাগানো’ অভিযানগুলির মধ্যে অন্যতম তা মেনে নিয়েছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি হামলার পক্ষে নিজের যুক্তিও সাজিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের দাবি, হাজার হাজার মার্কিন সেনার মৃত্যুর জন্য দায়ী সোলেমানি। তা-ই এমন শক্ত প্রত্যাঘাতের প্রয়োজন ছিল।