-ফাইল ছবি।
নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ার বিল্ডিংয়ের ছাদে বসানো হয়েছে সুবিশাল একটা ‘ঘড়ি’। যেখানে প্রতি মুহূর্তে দেখানো হচ্ছে, আমেরিকায় কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কী ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের গাফিলতিতে।
সুবিশাল বিল বোর্ডে রাখা সেই ‘ঘড়ি’র নীচে লেখা: করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মার্কিন প্রশাসনের গাফিলতির জন্য সংখ্যাটা এমন হতে পারে। বিল বোর্ডে ওই ‘ঘড়ি’টি বানিয়েছেন নিউ ইয়র্কের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রকার ইউজিন জারেকি। যার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ট্রাম্পের মৃত্যুঘড়ি’।
সোমবার পর্যন্ত ওই ‘ঘড়ি’ জানিয়েছে, মার্কিন মুলুকে করোনা সংক্রমণে যে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৪৮ হাজার মানুষই মারা গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের গাফিলতিতে। আর এক সপ্তাহ আগে আমেরিকায় বাধ্যতামূলক ভাবে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং চালু করা হলে সোমবার পর্যন্ত অন্তত ৪৮ হাজার মানুষকে করোনা সংক্রমণের শিকার হতে হত না। করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে আমেরিকাই আপাতত শীর্ষে।
ওই ‘ঘড়ি’ এও জানাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন যদি এক সপ্তাহ আগে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতেন, সেটাই হত বিচক্ষণতার কাজ। কিন্তু প্রশাসনিক গাফিলতির জন্যই আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে অন্তত ৬০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনার আতঙ্কের মাঝে ৩৫ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রীকে দেখে ভরসা পাচ্ছেন দেশবাসী
আরও পড়ুন: এ বার করোনার টিকা আবিষ্কার? ইতালির বিজ্ঞানীদের দাবি ঘিরে আশার আলো
পরে তাঁর একটি পোস্টে দু’-দু’বারের পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্রকার জারেকি লিখেছেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়া পরেও আমেরিকায় গত ১৬ মার্চ পর্যন্ত সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বাধ্যতামূলক ভাবে চালু করা হয়নি। স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত খোলা রাখা হয়েছিল। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং চালু করা হয় ১৬ মার্চ। যেটা ৯ মার্চ চালু করা হলে করোনায় এত মানুষের মৃত্যু হত না আমেরিকায়।’’ নিউ ইয়র্কের চলচ্চিত্রকার জারেকি ‘সানড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ দু’-দু’বারের পুরস্কারজয়ী।
আমেরিকার যে এপিডেমিওলজিস্টের উপর এখন সবচেয়ে বেশি ভরসা হোয়াইট হাউসের, সেই সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফওসিও এপ্রিলে সখেদে বলেছিলেন, ‘‘আরও আগে ব্যবস্থা নেওয়া গেলে আমরা আরও অনেককে বাঁচাতে পারতাম।’’
সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে জারেকি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘‘সঙ্কট মোকাবিলার জন্য আমাদের আরও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের প্রয়োজন ছিল। ফলকে নিহত সেনাদের নাম যেমন মনে করিয়ে দেয় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যুদ্ধে, তেমনই এই ঘড়িও মনে করিয়ে দিচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসনের গাফিলতির ককটা মাসুল গুনতে হল আমাদের।’’