উল্টে গিয়েছে ট্রেনের বগি। রবিবার পাকিস্তানের নবাবশায়ে। ছবি: এএফপি।
যাত্রিবাহী দূরপাল্লার ট্রেন উল্টে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে পাকিস্তানে। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার পাকিস্তানে লাইনচ্যুত হয়েছে একটি যাত্রিবাহী দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনের বেশ কয়েকটি কামরা। সেই ঘটনায় শতাধিক যাত্রী জখম হয়েছেন বলেও জানিয়েছে তারা।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ দুপুর ৩টে নাগাদ এই খবর প্রথম প্রকাশ করে। তবে পরে জানা যায় ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটির নাম ‘হাজারা এক্সপ্রেস’। প্রায় ১০০০ যাত্রী ছিলেন সেই ট্রেনে।
রবিবার ট্রেনটি করাচি থেকে রাওয়ালপিন্ডির দিকে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনাটি ঘটে নবাবশার কাছে। সারহারি রেলস্টেশনের সিগন্যালের কিছু আগে আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ট্রেনটি। প্রাথমিক ভাবে অন্তত পাঁচটি কামরা উল্টে গিয়েছে বলে জানা গেলেও পরে দুর্ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে নানারকম তথ্য আসতে শুরু করে।
পাকিস্তানে ট্রেন দুর্ঘটনার এই ছবিগুলি প্রকাশ করেছে পাক সংবাদমাধ্যম। ছবি: সংগৃহীত।
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, উল্টে যাওয়া কামরার সংখ্যা ৮টি কিংবা ১০টি। তবে সরকারি ভাবে এই সংখ্যা নিয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। পাকিস্তান রেলওয়ের ডিভিশনাল কমার্শিয়াল অফিসার মহসিন সিয়ালকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাক সংবাদমাধ্যম ডনকে বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত জানি না কতগুলি কামরা উল্টে গিয়েছে। তবে কেউ বলছে ৫টি, কেউ বলছে ১০টি। এখনও রেলের তরফে কোনও তথ্য হাতে এসে পৌঁছয়নি।’’
রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা নিয়েও কিছু জানায়নি পাকিস্তানের সরকার। তবে ডন জানিয়েছে, শতাধিক যাত্রী এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন অন্তত ৩০। আরও অনেকের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পাক সংবাদমাধ্যমটি। কারণ, খোদ প্রশাসনিক কর্তারাই ঘটনাটিকে বড় দুর্ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন। এ ব্যাপারে শাহিদ বেনজিরাবাদের ডিআইজিকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।’’
দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে ট্রেনের বগি। রবিবার নবাবশায়ে। ছবি: সংগৃহীত
যদিও হতাহতের সংখ্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কোনও প্রশাসনিক কর্তা। জানা যায়নি দুর্ঘটনার কারণও। পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় রেল পরিবহণ এবং উড়ান মন্ত্রী খোয়াজা সাদ রফিক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি স্বাভাবিক গতিতেই যাচ্ছিল। তাই এই দুর্ঘটনার নেপথ্য অন্তর্ঘাত রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে একইসঙ্গে প্রযুক্তিগত গোলযোগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না পাক রেলমন্ত্রী।
আপাতত পাক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের শাহজাদপুর এবং নবাবশার মাঝামাঝি ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের উদ্ধারকাজ শুরু করেছে উদ্ধারকারী দল।