এসসিও সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলির রাষ্ট্রপ্রধানেরা - রয়টার্স।
সঙ্কটকালে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার উজবেকিস্তানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর সম্মেলন থেকে মোদী বললেন, “সদস্য দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সংযোগই সঙ্কট থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারে।”
সম্মেলনের মঞ্চ থেকে কোভিড অতিমারি এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মোদী বলেন, “বিশ্ব যখন কোভিড অতিমারির মোকাবিলা করতে সক্ষম হচ্ছে, তখন সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।” নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় মোদী জানান, এসসিও-র সদস্য দেশগুলিতে বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বাস করেন। তাই খাদ্য, নিরাপত্তা, জ্বালানি-সহ একাধিক বিষয়ে দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সরবরাহের পথ খোলা রাখার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
বিশ্বের নানা প্রান্তে খাদ্য এবং জ্বালানি সঙ্কট প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “অতিমারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধাক্কা দিয়েছে।” এই পরিস্থিতিতে অন্য দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে ভারত পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আস্থার উপরেই জোর দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের সম্ভাবনার কথা বলতে গিয়ে মোদী বলেন, “ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধির হার এই বছরেই সাড়ে সাত শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। আমি খুব আনন্দের সঙ্গে জানাই, বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে ভারতের অর্থনীতি সব চেয়ে দ্রুতবেগে বৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে।” দেশের সরকার মানুষের কল্যাণে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প নিচ্ছে বলে দাবি করে মোদী জানান, সদস্য রাষ্ট্রগুলি এই ব্যাপারে ভারতকে অনুসরণ করতে পারে।
মোদী বক্তব্য রাখার পরেই সম্মেলনের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পরের বারের এসসিও সম্মেলনের আয়োজক হিসাবে ভারতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সম্মেলন আয়োজনের ক্ষেত্রে চিন যে ভারতের পাশে থাকবে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন জিনপিং। মোদীর মতো জিনপিংও তাঁর বক্তব্যে সদস্য দেশগুলির পারস্পরিক সহযোগিতা এবং উন্নয়নে একযোগে কাজ করার কথা জানিয়েছেন। লাদাখ সীমান্তে সেনা সমাবেশ-সহ একাধিক বিষয়ে সম্প্রতি শীতল হয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক। তবে শুক্রবার চিন যে ভাবে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে, তাতে দুই দেশের সম্পর্কে উষ্ণতা ফিরতে পারে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহলের একাংশ। ঘটনাচক্রে, সম্মেলনে উপস্থিত রাষ্টপ্রধানদের ভিড়ে মোদীর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিংকে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-সহ একাধিক রাষ্ট্রপ্রধান এই এসসিও সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন। চিন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তানকে নিয়ে গঠিত এই আন্তর্জাতিক মঞ্চে সদস্য দেশগুলি পারস্পরিক নিরাপত্তা, শক্তিসাম্য, সরবরাহ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।