রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।
পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে বলে ফের ‘হুমকি’ দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও ধরি মাছ, না ছুঁই পানি। একই সঙ্গে বললেন, তাঁরা ‘পাগল’ হয়ে যাননি। ফলে কখনওই তাঁরা প্রথম অস্ত্র তুলবেন না।
রুশ মানবাধিকার কাউন্সিলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে গত কাল একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া বার্তায় পুতিন জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এখনও বহু দিন চলবে। তাঁরা সামরিক অভিযান থামাবেন না। তবে সেনা-বহর বাড়ানো হবে না এখনই। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘ভয়ানক একটা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সেটা লুকোনো ঠিক হবে না। তবে আমরা পাগল হয়ে যায়নি। পরমাণু অস্ত্র কী, আমরা জানি। রেজ়ারের মতো এই অস্ত্র হাতে নিয়ে আমরা গোটা পৃথিবীতে তাণ্ডব চালাব না।’’
এর পরই আমেরিকার কথা টেনে আনেন পুতিন। তাঁর বক্তব্য, আমেরিকা এমন একটা দেশ, যারা অন্য দেশের জমিতে পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র বসিয়ে রেখেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অন্তত অন্য দেশের এলাকায় পরমাণু অস্ত্র বসানো নেই, কৌশলগত ভাবেও নেই। আমেরিকানদের কিন্তু রয়েছে— তুরস্কে। ইউরোপের আরও কিছু দেশে আছে।’’ পুতিনের বক্তব্য, ‘‘নিজেরা এই ধরনের কাজ করা সত্ত্বেও পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়ার ভাবমূর্তি ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা এমন ভাবঁ দেখাচ্ছে, যেন রাশিয়া কোনও দ্বিতীয় শ্রেণির দেশ, তাদের কোনও অধিকারই নেই।’’
তবে যত প্রতিবন্ধকতাই আসুক না কেন, পিছু হটতে রাজি নয় মস্কো। পুতিন বলেন, ‘‘এর মধ্যেই আমাদের চলতে হচ্ছে। তবে আমাদের তরফে একটাই উত্তর— দেশের ভালর জন্য আমাদের এই লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। আমরা সেটাই করব। আর অন্য কোনও কিছু নিয়ে ভাবা হবে না।’’
এ দিনও রুশ হামলায় প্রাণহানি ঘটেছে ইউক্রেনে। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, ডনেৎস্ক অঞ্চলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ জন জখম। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘কুরাকোভের মতো শান্তিপূর্ণ শহরে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। বাজার, বাস স্টেশন, গ্যাস স্টেশন এবং বেশ কিছু বসতবাড়িতে আগুন ধরে যায়। অন্তত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ জন জখম।’’ এখন অবশ্য বেশির ভাগ রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে নিশানা করে। শীতকেই যুদ্ধের মূল হাতিয়ার করছে রাশিয়া। একটানা জ্বালানি কেন্দ্র ও বিদ্যুৎ স্টেশনগুলোতে হামলার জেরে ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিদ্যুৎহীন। বরফ-ঠান্ডায় মানুষের বাঁচা দায় হয়ে পড়েছে। এ জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে আশ্রয়-শিবির খুলেছে জ়েলেনস্কি সরকার। ঘরবাড়ি ছেড়ে সাধারণ মানুষ নিজের দেশেই ‘শরণার্থী’।