ভেবেছিলাম মরে গিয়েছি, নতুন বছরটা আর দেখা হবে না...

কে জানত বছরটা শুরু হবে এই ভাবে। এমন এক অভিজ্ঞতা দিয়ে, যা সারা জীবন মনে থেকে যাবে তাঁর। সুখের নয়, ভয়াবহ। বিধ্বংসী আগুন তখন তাঁর থেকে আর কয়েক মিনিটের দূরে। আর বাঁচার আশায় কোমরে দড়ি বেঁধে ব্যালকনি দিয়ে ঝুলে রয়েছেন তিনি। উদ্ধারকারী দলের চেষ্টায় আগুনের গ্রাস হওয়া থেকে রক্ষা পেলেন বটে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:২০
Share:

বুর্জ খলিফার পাশে জ্বলছে হোটেল। ছবি: এএফপি।

কে জানত বছরটা শুরু হবে এই ভাবে। এমন এক অভিজ্ঞতা দিয়ে, যা সারা জীবন মনে থেকে যাবে তাঁর। সুখের নয়, ভয়াবহ। বিধ্বংসী আগুন তখন তাঁর থেকে আর কয়েক মিনিটের দূরে। আর বাঁচার আশায় কোমরে দড়ি বেঁধে ব্যালকনি দিয়ে ঝুলে রয়েছেন তিনি। উদ্ধারকারী দলের চেষ্টায় আগুনের গ্রাস হওয়া থেকে রক্ষা পেলেন বটে। তবে ঝলসে গিয়েছে তাঁর ভিতরটা। সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এখনও কেঁপে কেঁপে উঠছেন তিনি।

Advertisement

নতুন বছর শুরু হতে তখন আরও কিছুটা সময় বাকি। বুর্জ খালিফার পাশে যে বহুতল হোটেলে আগুন লেগেছে তিনি তখন তার ৪৮ তলায় দাঁড়িয়ে। নতুন বছরের আনন্দকে ক্যামেরাবন্দি করার জন্য। পেশার তাগিদে। সঙ্গে ছিল এক বন্ধু। দু’জনেই সাংবাদিক। নতুন বছরে বুর্জ খালিফাকে ঘিরে যে আলো এবং উৎসবের বন্যা হওয়ার কথা। সেটাই ক্যামেরাবন্দি করতে গিয়েছিলেন দু’জনে। যে হোটেলে আগুন লাগে তারই ৪৮ তলায় উঠেছিলেন। জানলার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। কখন যে নীচ থেকে চুপিসারে বিধ্বংসী আগুন তাঁদের দিকে ছুটে এসেছে একবারের জন্যও টের পাননি তিনি। বন্ধুই প্রথম দেখতে পান। আর দেখেই চিৎকার করে সাবধান করে তাঁকে। বন্ধু ছুটে বেড়িয়ে গেলও আটকে পড়েন তিনি। তত ক্ষণে ধোঁয়ার কুণ্ডলী ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেছে। উপায় না দেখে নেমে পড়েন ব্যালকনিতে। বুঝেছিলেন এতে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম। কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘর ছাড়িয়ে সেই আগুন ব্যালকনিতেও এসে পড়বে। পাশেই ঝুলছিল শক্তপোক্ত দড়ি। সেই দড়ি কোমরে বেঁধে ঝুলে পড়েন তিনি। এই দড়ির সাহায্যেই ওই বহুতলটিকে বাইরে থেকে পরিষ্কারের কাজ করেন কর্মীরা।

পড়ুন: বর্ষশেষের রাতে হোটেলে আগুন

Advertisement

এর পর... প্রতিটা মুহূর্ত তাঁর কাছে ঘণ্টার মতো কাটছিল। চিৎকার করছিলেন। কিন্তু শুনবে কে? ১ ঘণ্টা এই ভাবেই ঝুলে ছিলেন তিনি। ভেবেই নিয়েছিলেন নতুন বছরের সকালটা তাঁর আর দেখা হবে না। তাই চোখ বন্ধ করে শুধু প্রিয়জনদের কথাই ভাবছিলেন। কখন যে উদ্ধারকীরা দল এসে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। মনে ছিল না সে কথাও। জ্ঞান যথন ফিরল তখন হাসপাতালে। চারিদিকে সাংবাদিকদের ভিড়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement