বিছানার নীচে কুড়ুল রাখার টোটকা থেকে হবু মায়েদের ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো। বিফলে গিয়েছে সব। গত এক দশকে জন্ম নেয়নি একজন পুত্রসন্তানও। পোল্যান্ডের ছোট্ট গ্রাম মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকিয়ে-তে।
১৯৪৫-এর আগে এই গ্রাম ছিল জার্মানির অংশ। নাম ছিল, ‘মিসটিটজ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে গ্রামটি পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়।
দক্ষিণ পশ্চিম পোল্যান্ডের এই গ্রাম সদ্যোজাত পুত্রসন্তানের মুখ দেখার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষায়। গ্রামের মেয়র ঘোষণা করেছেন, যে দম্পতি পুত্রসন্তান উপহার দেবেন গ্রামকে, তাঁদের জন্য থাকবে বিশেষ বিস্ময়-উপহার।
পাশাপাশি, নবজাতকের নামে গ্রামের একটি রাস্তার নামকরণ করা হবে। তার জন্ম উপলক্ষে বপন করা হবে ওক গাছ।
এই গ্রামে ৯২টি বাড়িতে বাস ৩০০ জন মানুষের। ২০১০ সালের পরে এই গ্রাম কোনও সদ্যোজাত শিশুপুত্রের কান্না শোনেনি।
গ্রামবাসী থেকে বিজ্ঞানী, কেউ ভেবে কুলকিনারা পাননি। ভেদ করা যায়নি প্রকৃতির এই রহস্য।
অথচ সার্বিক ভাবে পোল্যান্ডে পুত্রসন্তানের জন্মহার বেশি। ২০১৭ সালে সে দেশে ২ লক্ষ ৭ হাজার পুত্রসন্তানের জন্ম হয়েছে। কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার। কিন্তু সারা দেশের ধারা ওলটপালট হয়ে গিয়েছে এই প্রান্তিক গ্রামে।
গত ১০ বছরের হিসাবটা চোখে পড়ার মতো হলেও এই গ্রামে পুত্রসন্তানের জন্মহার কন্যাসন্তানের চেয়ে চিরকালই অনেকটা কম। মেয়েদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই গ্রামে সব পেশাতেই স্বাভাবিক ভাবে নারীশক্তির প্রাধান্য। মাঠে কৃষিকাজ থেকে দমকলবাহিনী, সর্বত্র নেতৃত্বে মেয়েরাই।
কিন্তু গ্রামবাসীদের মত, এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তাঁরা ‘পুরুষালি’ কাজে চাইছেন পুরুষকর্মীই। তাঁদের মতে, নয়তো বিঘ্নিত হচ্ছে কাজের গুণমান। ফলে এখানেও সেই পুত্রসন্তানের অপেক্ষাতেই দিন গোনা চলছে।
গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, এই জন্মহার চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দেখা দিতে পারে আরও একটি সমস্যা। তা হল, মেয়েদের বিয়ের জন্য গ্রামে পাত্র পাওয়া যাবে না। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া