বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে নেহাতই একটা দেওয়াল। তবে কাছে গেলেই বোঝা যায়, এই ‘দেওয়াল’ বসবাসেরও যোগ্য।
এই বাড়ির ঠিকানা লেবানন। সে দেশ তো বটেই, এই বাড়ি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে সরু বাড়ি। বাড়িটা এতটাই সরু যে, একে দেওয়াল বলে ভুল করাটা একেবারেই আশ্চর্যজনক নয়।
লেবাননের বেইরুটের পুরনো লাইট হাউসের কাছে অবস্থিত এই বাড়িটা। বাড়ির উচ্চতা ১৪ মিটার এবং চওড়ায় মাত্র ১ মিটার। দুই ভাইয়ের শত্রুতার জেরেই নাকি এই বাড়ি তৈরি হয়েছিল।
কী রকম? সরু বাড়িটা এবং তার ঠিক পিছনেই যে বড় বাড়ি দেখা যাচ্ছে, এই দুটো বাড়ি দুই ভাইয়ের। পিছনের বাড়িটার সি-ভিউ আটকাতেই ঠিক তার সামনে এই সরু বাড়িটা গড়ে তোলেন আর এক ভাই।
বাড়িটা তৈরি হয়েছিল ১৯৫৪ সালে। পৈতৃক সম্পত্তি হস্তান্তরিত হয়েছিল ওই দুই ভাইয়ের কাছে। কিন্তু তখন শুধু ফাঁকা জমি ছিল।
জমিটার অনেক অংশ স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন কাজে দখল করে নিয়েছিল। ফলে জমিটার আকার বদলে গিয়েছিল। জমিটা দুই ভাই কী ভাবে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবেন, তা নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন চলে।
এক ভাই পিছনের বড় বাড়িটা তৈরি করে ফেলেন। শুরু করেন হোটেল ব্যবসা। জমিটার অবস্থান খুব সুন্দর। সামনে রাস্তা আর তার ওপারেই সমুদ্র। এরকম একটা লোকেশনে হোটেল, দারুণ চলতে শুরু করে।
সেটাই নাকি সহ্য হয়নি অন্য ভাইয়ের। ভাইয়ের ব্যবসার ক্রতি করার জন্য এবং তাঁর হোটেলের সি-ভিউ আটকানো জন্য অভিনব পরিকল্পনা করেন তিনি। ওই হোটেলের সামনে যেটুকু জমি ছিল, তাতেই অদ্ভুত আকারের একটি বাড়ি বানিয়ে ফেলেন।
দেওয়াল আকৃতির এই বাড়িটার প্রতিটি ফ্লোরে দুটো করে ঘর রয়েছে। একাট সময় এই বাড়ি যৌনকর্মীরা ব্যবহার করতেন। তারপর শরণার্থী শিবির হিসাবে কাজে লাগানো হত বাড়িটা।
বর্তমানে বাড়িটা বেআইনি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমানে বাড়িটায় কোনও বাসিন্দা নেই। খালি পড়ে রয়েছে সেটা। বাড়িটাক ভবিষ্যত্ কী হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে স্থানীয় প্রশাসন।