ফাইল চিত্র।
মায়ানমারের জুন্টা সরকারকে এ বার যুদ্ধাপরাধ নিয়ে সতর্ক করল রাষ্ট্রপুঞ্জ। গত বছরের সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় সম্প্রতি মায়ানমারের ডজনখানেক গণতন্ত্রকামী নেতা ও আন্দোলনকর্মীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে জুন্টার অধীনে মায়ানমারের আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন মায়ানমার আইনসভার প্রাক্তন এমপি তথা আউং সান সু চি-র দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতা হিয়ো জ়েয়া থয়ো এবং জনপ্রিয় গণতন্ত্রকামী নেতা কো জিমি। এঁদের প্রাণদণ্ড হলে, তা যুদ্ধাপরাধের সমান হবে বলে মায়ানমার সেনাকে সতর্ক করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত সংগঠনের প্রধান নিকোলাস কউমজিয়ান।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল নির্বাচিত সরকারকে। বন্দি করা হয় শান্তির নোবেলজয়ী সু চি-সহ বহু গণতন্ত্রকামী নেতা-কর্মীকে। সু চি-র বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা চলছে আদালতে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বেছে বেছে কিছু রাজনৈতিক বিরোধীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে। কবে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে, তা স্পষ্ট নয়। তাঁদের আর বেশি দিন বাঁচিয়ে রাখা হবে না বলে আশঙ্কা বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের।
বিষয়টি নিয়ে এ বার মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরাও। অভিযুক্তদের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ধৃতদের বিচার প্রক্রিয়া চলেছে আদালতের বন্ধ ঘরে। কী হচ্ছে, তা জনসমক্ষে আনা হয়নি। নিকোলাস বলেছেন, ‘‘অভিযুক্তদের মানবাধিকার আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ভয়ানক ভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। কাউকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হোক বা কয়েক ঘণ্টার জন্য আটকে রাখা হোক, যে বিচার প্রক্রিয়ায় অভিযুক্তদের অধিকার রক্ষা করা হয় না, তা যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সমান। যাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিচার প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ছিল না কি, পক্ষপাতদুষ্ট, তা কেউই জানি না।’’
নিকোলাসের কথায়, ‘‘রাজনৈতিক বিরোধীদের মনে ভয় ঢোকাতেই মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ কার্যকর করতে চায় জুন্টা সরকার।’’ এ নিয়ে জুন্টা সরকারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।