গত কয়েক মাস ধরে সিংহাসনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির কাজ চলছে। বিশেষ দিনটির জন্য আরও এক বার সাজিয়ে তোলা হচ্ছে তাকে। ছবি: সংগৃহীত।
সাতশো বছরেরও বেশি বয়স তার। এই দীর্ঘ সময় ধরে ব্রিটেনের ইতিহাস, নানা ওঠাপড়ার সাক্ষী সে। বয়সের ভারে জবুথবু হয়ে গেলেও তার গুরুত্ব এতটুকু কমেনি। আগামী ৬ মে, ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকের অনুষ্ঠান উপলক্ষে আরও এক বার দেখা যাবে সেই রাজকীয়, ঐতিহাসিক, সাতশো বছরের প্রাচীন সিংহাসনটিকে। গত কয়েক মাস ধরে সিংহাসনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির কাজ চলছে। বিশেষ দিনটির জন্য আরও এক বার সাজিয়ে তোলা হচ্ছে তাকে।
রানি এলিজ়াবেথের মৃত্যুর পর রাজা হিসাবে তৃতীয় চার্লসের নাম ঘোষণা করা হয়েছে ঠিকই। তবে রাজ্যাভিষেকের অনুষ্ঠান এখনও বাকি। ৬ মার্চ লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে হবে সেই উৎসব। সে দিনই দেখা যাবে ওক কাঠের তৈরি সেই প্রাচীন সিংহাসনটিকে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছেন যিনি, সেই ক্রিস্টা ব্লেসলি জানিয়েছেন, সিংহাসনটি খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। ওপরের স্তরগুলি খসে খসে পড়ছে। সেটির গঠনও বেশ জটিল। গত চার মাস ধরে সিংহাসনটি মেরামতি করছেন ক্রিস্টা।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ১৩০৭ সালে এই সিংহাসন তৈরি করিয়েছিলন রাজা প্রথম এডওয়ার্ড। উচ্চতায় প্রায় ২.০৫ মিটার। তখন সোনার পাতে মুড়ে, রংবেরঙের কাচ দিয়ে সাজানো হয়েছিল সেটিকে। ওক কাঠের সিংহাসনে খোদাই করা রয়েছে নানা ধরনের পশু, পাখি আর সাধুর মূর্তি। পায়ের কাছে রাজ পরিবারের প্রতীক রূপে রয়েছে সিংহ-মূর্তি। গত সাতশো বছর ধরে ব্রিটেনে যত রাজা-রানির রাজ্যাভিষেক হয়েছে, তার সাক্ষী থেকেছে এই সিংহাসন।
সিংহাসনের মধ্যেই রাখা আছে সুপ্রাচীন একটি পাথর। যার নাম ‘স্টোন অব স্কোন’। এটিকে ‘স্টোন অব ডেস্টিনি’ও বলা হয়। ইটেরমতো দেখতে আয়তাকার ওই পাথরে লোহার আংটা লাগানো রয়েছে। ১২৯৬ সালে স্কটল্যান্ড জয়ের পরে সেখান থেকে পাথরটি নিয়ে আসা হয় ব্রিটেনে। তবে ১৯৯৬ সালে স্কটল্যান্ডকে পাথরটি ফিরিয়ে দেয় ব্রিটিশ সরকার। ওই পাথর ছাড়া আজও রাজ্যাভিষেকের অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ বার সেটিকে লন্ডনেআনা হয়েছে।