একটা দিন পাল্টে দিল কিশোর আহমেদের জীবন

একটা দিনের ঘটনা আমূল বদলে দিল টেক্সাসের ১৪ বছরের কিশোর আহমেদ মহম্মদের জীবন। গত ২৪ ঘন্টায় কিশোর আহমেদের জীবনে ঘটে গেল অনেক উত্থান-পতন! আহমেদ নতুন একটি ডিজিটাল ঘড়ি বানালো। ঘড়িটি স্কুলের এক শিক্ষিকাকে দেখাতে নিয়ে এল।

Advertisement

সংবাদসংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৬:২৫
Share:

একটা দিনের ঘটনা আমূল বদলে দিল টেক্সাসের ১৪ বছরের কিশোর আহমেদ মহম্মদের জীবন।

Advertisement

গত ২৪ ঘন্টায় কিশোর আহমেদের জীবনে ঘটে গেল অনেক উত্থান-পতন!

আহমেদ নতুন একটি ডিজিটাল ঘড়ি বানালো। ঘড়িটি স্কুলের এক শিক্ষিকাকে দেখাতে নিয়ে এল। আর যেহেতু তার নাম আহমেদ মহম্মদ, তাই তার এই কাজটিকেও দেখা হল সন্দেহের চোখে। ডিজিটাল ঘড়িটিকে ‘বোমা’ বলে সন্দেহ করা হল। পুলিশে খবর গেল। গ্রেফতার হল আহমেদ। তাকে ঘন্টার পর ঘন্টা জেরা করা হল।

Advertisement

উল্টো ঘটনাও ঘটল। আহমেদের এই হেনস্থার প্রতিবাদে সরব হলেন প্রাক্তন মার্কিন ‘ফার্স্ট লেডি’ হিলারি ক্লিন্টন। সমালোচনার ঝড় বয়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার বানানো ঘড়িটি দেখার জন্য আহমেদকে হোয়াইট হাউসে আসার আমন্ত্রণ জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আহমেদের সমর্থনে এগিয়ে এলেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ। আহমেদের সঙ্গে ফেসবুকে কথা বলতে চাইলেন জুকেরবার্গ।

বিপরীতমুখী ঘটনার টানাপোড়েনে কি আমূল বদলে গেল না আহমেদের জীবন-মাত্র ২৪ ঘন্টায়?

যা হল, আর তার উপর গত ২৪ ঘন্টায় যে ধরনের ‘মিডিয়া-কভারেজ’ হয়েছে, তাতে হয়তো ‘সেলিব্রিটি’ই হয়ে গেল আহমেদ!

এত সব ঘটনর পর আহমেদ যখন

বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হয় সাংবাদিকদের, তখন তার চোখে-মুখে স্বাভাবিক ভাবেই যেন কিছুটা ছিল তার ছাপ।

তবু দেখা গেল, একটা দিন অনেকটাই বদলে দিয়েছে আহমেদকে। অন্য কিশোরদের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত করে তুলেছে তাকে। বুঝতে পেরেছে, কী ভাবে ভুল বোঝার মাশুল গুণতে হয়!

ভুল বোঝার ‘খেসারত’ই গত ২৪ ঘন্টায় দিতে হয়েছে আহমেদকে। তাই এ দিন সাংবাদিকদের কাছে তার প্রথম প্রতিক্রিয়াটাই ছিল, ‘‘আমরা যেন ভুল বোঝার বদভ্যাসটা ছাড়তে পারি! আমার বানানো ডিজিটাল ঘড়িটা স্কুলের ম্যাডামকে দেখাতে গিয়েছিলাম। উনি ওটাকে দেখে ভয় পেয়ে গেলেন। হয়তো ওটাকে বোমা ভেবেছিলেন!’’

গত ২৪ ঘন্টায় টেক্সাসের ১৪ বছরের কিশোরটির জীবনে যে ঝড় বয়ে গেল, সেটা তার লাগল কেমন?

আহমেদের চটজলদি জবাব, ‘‘আমার খুবই খারাপ লেগেছে। শিক্ষক কেন যে আমাকে ভুল বুঝলেন, কে জানে! এর পর এই স্কুলে আমার আর থাকার ইচ্ছা নেই।’’

নতুন ধরনের যন্ত্র বানাতে তার যে ভালো লাগে, সে কথা স্পষ্টই বলেছে আহমেদ। বলেছে, ‘‘এমন আরও অনেক নতুন যন্ত্র বানাতে চাই আমি। চাই, আমার মতো আরও অনেক কিশোরের প্রতিভার স্ফূরণ হোক। পড়তে যেতে চাই এমআইটি-তে (ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি)। নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে গিয়ে যদি আমারই মতো কেউ বিপদে পড়ে, তা হলে আমি তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গও এ দিন পাশে দাঁড়িয়েছেন আহমেদের। বলেছেন, ‘‘আহমেদের মতো প্রতিভাবানরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। আহমেদ, তুমি আবার যদি ফেসবুকে আসো, তোমার সঙ্গে কথা বলার খুব ইচ্ছা রইল। উদ্ভাবনের ইচ্ছাটা জারি রাখো। চালিয়ে যাও!’’

পর্যাপ্ত প্রত্যয়ে এ দিন আহমেদ নিজেও জানিয়েছে, এত কিছুর পর সে মোটেই থামবে না। চালিয়ে যাবে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement