Lottery Scam

লটারি প্রতারণায় রাজ্যে ইডি-তল্লাশি

ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, ‘‘কেরলের কোচি ও কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালতে অভিযোগ দায়ের করে মামলা করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৩
Share:

রাজ্যে ইডির তল্লাশি। —ফাইল চিত্র।

ইডি-র নজরে তিনি রয়েছেন গত পাঁচ বছর ধরে। কিন্তু লটারি ব্যবসায়ী সান্তিয়াগো মার্টিন দেশজোড়া তোলপাড় ফেলে দেন এই ২০২৪ সালে, যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রকাশিত নির্বাচন কমিশনের তথ্যে দেখা যায়, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি চাঁদা দিয়েছিল তাঁরই সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং’। বন্ডের মাধ্যমে মোট ১৩০০ কোটি টাকারও বেশি চাঁদা দেওয়া সেই মার্টিনের সংস্থা ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের অন্তত ২০টি ঠিকানায় একযোগে তল্লাশি চালাল ইডি। এর মধ্যে রয়েছে সল্টলেকের মহিষবাথান ও উত্তর ২৪ পরগনার মাইকেল নগর-সহ কলকাতার আশেপাশেরচারটি ঠিকানাও।

Advertisement

ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, ‘‘কেরলের কোচি ও কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালতে অভিযোগ দায়ের করে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতে কলকাতা ও দিল্লির তদন্তকারী দল যৌথ ভাবে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।’’ ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি লটারি-দুর্নীতির তদন্তে এই তল্লাশি হয়েছে মার্টিন, তাঁর জামাই আধভ অর্জুন এবং তাঁদের সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্কিত ঠিকানাগুলিতে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও তামিলনাড়ুর চেন্নাই ও কোয়েম্বত্তূর, হরিয়ানার ফরিদাবাদ এবং পঞ্জাবের লুধিয়ানায় ইডি তল্লাশি চালিয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, ‘ফিউচার গেমিং’-এর বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে সপ্তাহখানেক আগে দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছিল ইডি। ওই সব জায়গায় তল্লাশি অভিযানে বাজেয়াপ্ত নথির সূত্রে পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জনের জড়িত থাকার সূত্র পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে, চেন্নাইয়ে মার্টিনের বাড়ি থেকে হিসাব-বহির্ভূত ৭.২ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল। ওই তদন্ত বন্ধ করার জন্য চেন্নাই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার আর্জিতে নিম্ন আদালত সবুজ সঙ্কেত দেয়। কিন্তু গত মাসে সেই রায় খারিজ করে মার্টিন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইডি-কে তদন্ত চালাতে বলে মাদ্রাজ হাই কোর্ট।

তদন্তকারীদের কথায়, ‘‘ফিউচার গেমিং সংস্থার অধীনে একাধিক লটারির ব্যবসা করা হয়। তাতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং বেআইনি আর্থিক লেনদেনের হদিস পাওয়া গিয়েছে।’’ এ দিনের তল্লাশি অভিযানে কয়েক হাজার কোটি টাকার অবিক্রিত টিকিট উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, বিক্রি না হওয়া ওই টিকিটেরই লটারি করা হত এবং ‘নিজেদের লোকেদের’ নামে পুরস্কার ঘোষণা করা হত। ফলে লটারির পুরস্কার-মূল্য ফের সংশ্লিষ্ট সংস্থাতেই ফিরে আসত। তদন্তকারীদের দাবি, লটারি দুর্নীতিতে এ রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী লাভবান হয়েছেন বলে প্রাথমিক সূত্রে উঠে আসছে। এ দিনের তল্লাশি অভিযানে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং বেআইনি আর্থিক লেনদেনের কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

Advertisement

২০১৯ থেকেই ইডি-র পদক্ষেপ জারি রয়েছে মার্টিনের বিরুদ্ধে। গত বছরও তিনি ইডি-র তল্লাশির মুখে পড়েছিলেন। লটারি-জালিয়াতির জেরে সিকিম সরকারের ৯০০ কোটি টাকা ক্ষতির সেই মামলায় মার্টিনের প্রায় ৪৫৭ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement