মোজ়াম্বিকে আইএস জঙ্গি ছবি: সংগৃহীত।
পূর্ব আফ্রিকার মোজ়াম্বিকের পালমা শহরে তিন দিক থেকে হামলা চালায় শতাধিক জঙ্গি। কোনও সংগঠন ঘটনার দায় না-নিলেও এর পিছনে আইএস-এর হাত রয়েছে বলে জানিয়েছে শহরের প্রশাসন।
এই জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে স্থানীয়রা ছাড়াও রয়েছেন বহু ভিন্ দেশি। যদিও তাঁরা কোন দেশের নাগরিক, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া এখনও খোঁজ নেই অনেকের। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের তরফে শনিবার জানানো হয়, বুধবার কাবো ডেলগাড়ো প্রদেশের পালমা শহরে নির্বিচারে হামলা চালায় দোকান, ব্যাঙ্ক এবং একটি সেনা ছাউনিতে। ওই অতর্কিত হানার কিছুক্ষণ পর থেকেই বিভিন্ন রাস্তায় মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যেতে শুরু করে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রের খবর, পালমায় হামলা চালানো জঙ্গিদের অনেকেই সেনার পোশাকে ঢুকেছিল। রাস্তায় তো বটেই বাড়ি ঢুকেও হত্যালীলা চালাতে শুরু করে তারা। একাধিক ব্যাঙ্ক লক্ষ্য করে ছোড়া হয় বিস্ফোরক। বাসিন্দাদের সঙ্গে দূরাভাষ বা অন্য কোনও ভাবে যোগাযোগের পথও বিচ্ছিন্ন করে জঙ্গিরা।
রবিবার প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র জানান, আমারুলা নামে শহরের একটি হোটেলে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন অনেকেই। তবে ওই হোটেলেও হানা দেয় জঙ্গিরা। তাদের হাত থেকে বাঁচতে পালাচ্ছিলেন সাত জন। যদিও জঙ্গিদের নজরে আসায় ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয় তাঁদের।
প্রাদেশিক নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে শুক্রবার রাতে গাড়ির কনভয় নিয়ে দুর্গতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। দফতরের একটি সূত্রের খবর, মোট ১৭টি গাড়ি রওনা দিয়েছিল একটি হোটেল থেকে। মোজ়াম্বিকানরা ছাড়াও বহু বিদেশিও ছিল সেই কনভয়ে। তবে পথে সেটির উপরেও হামলা চালায় জঙ্গিরা। শেষ পর্যন্ত ১৭টির মধ্যে মাত্র সাতটি গাড়ি ফিরতে পেরেছে। যদিও ওই সাতটি গাড়ির মধ্যেও ছিল একাধিক মৃতদেহ। গুরুতর জখমের সংখ্যাও কম নয়। তবে কনভয়ের বাকি গাড়ি এবং যাত্রীদের এখনও কোনও হদিস নেই।
পালমার উপকূলবর্তী এলাকায় দুর্গতদের নৌকোয় করে উদ্ধারের চেষ্টাও চালানো হলেও বিশেষ ফল হয়নি, জানান পার্শ্ববর্তী দ্বীপ পেম্বার নিরাপত্তা আধিকারিকেরা। উদ্ধারকারী নৌকোগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয় জঙ্গিরা। তবে যাঁরা কোনও ভাবে পালমা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন তাঁদের পার্শ্ববর্তী বন্দর থেকে উদ্ধার করে পেম্বায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিকেরা। এই দলে কমপক্ষে ১২০জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।