বিস্ফোরণের পরে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা। মঙ্গলবার কাবুলে। ছবি: পিটিআই।
প্রথমে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ, তার পরে বন্দুকবাজদের এলোপাথাড়ি গুলি। জোড়া জঙ্গি হামলায় ফের রক্তাক্ত আফগানিস্তানের রাজধানী। আজ দুপুরে কাবুলের এক সেনা হাসপাতালে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৯ জনের। আহতের সংখ্যা অন্তত ৫০।
গত ১৫ অগস্ট তালিবান আফগান রাজধানী দখলের পর থেকে একাধিক বার দেশের নানা শহরে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। কখনও শিয়া মসজিদে প্রার্থনার সময়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কখনও বা রাস্তার ধারে রাখা বোমা ফেটে নিহত ও আহত হয়েছেন বহু মানুষ। হতাহতদের মধ্যে সাধারণ আফগান নাগরিকদের সঙ্গে তালিবান যোদ্ধারাও রয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হামলার দায় নিয়েছে আইএস অথবা আইএস-কে (খোরাসন)। আজ রাত পর্যন্ত হাসপাতালে হামলার দায় অবশ্য কেউ নেয়নি। তবে তালিবান সরকারের অভিযোগের আঙুল আইএসের দিকেই।
তালিবানের মুখপাত্র হামলার কিছু পরে এক বিবৃতিতে জানান, হামলাকারীদের সকলকেই হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালের মূল প্রবেশ পথে প্রথম বিস্ফোরণের পর পরই তালিবান যোদ্ধারা ট্রাকে করে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
আজ দুপুর একটা নাগাদ প্রথমে হাসপাতালের প্রধান ফটকে নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয় এক আত্মঘাতী জঙ্গি। হাসপাতালে হুড়োহুড়ি পড়ে গেলে সেই সুযোগে কয়েক জন বন্দুকবাজ ভিতরে ঢুকে পড়ে। এক বিদেশি সাংবাদিক জানাচ্ছেন, প্রথম বিস্ফোরণের আধ ঘণ্টা পরে আরও একটা বিস্ফোরণ হয় হাসপাতালে। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় কাবুলের আকাশ। অতিস্পর্শকাতর ‘গ্রিন জ়োন’-এ যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সাময়িক ভাবে।
এক চিকিৎসক জানালেন, প্রথম বিস্ফোরণের পরেই তাঁদের ভিতরে একটি ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকতে বলা হয়। ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘‘মনে হয় ওরা (বন্দুকবাজেরা) বিভিন্ন ঘরে ঢুকে ঢুকে গুলি চালিয়ে মানুষ মারছিল।’’ তবে এটাই প্রথম বার নয়। এর আগেও এই একই হাসপাতালে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ২০১৭ সালে চিকিৎসকদের ছদ্মবেশে হাসপাতালে ঢুকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল বন্দুকবাজেরা। সে বার ৩০ জনের মৃত্যু হয়। বন্দুকের গুলি শেষ হয়ে যাওয়ায় ছুরি নিয়েও সে বার মানুষ কুপিয়েছিল জঙ্গিরা। তালিবান তখন ঘটনার দায় আইএসের উপর চাপালেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, স্থানীয় ভাষায় তালিবানের জয়ধ্বনি করেছিল জঙ্গিরা।