প্রতীকী ছবি।
ভারত ও বাংলাদেশ— দু’দেশের সরকারই তাকে খুঁজছিল। শেষমেশ কলকাতা পুলিশের এসটিএফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ঢাকার সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার হল ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি আবু তালহা। ধৃত নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন, ‘আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’-এর এ রাজ্যেরমাথা ছিল ইকরামুল হক ওরফে তালহা। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, তাকে এ রাজ্যে নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এসটিএফের অভিযোগ, মূলত তালহার নির্দেশেই গত কয়েক বছর ধরে আল কায়দার স্লিপার মডিউল তৈরি করে এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতে যুবকদের রিক্রুট করা হয়েছিল। কমপক্ষে ১০টি মামলা ঝুলছে তালহার নামে। কলকাতা পুলিশের মতো রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাও (এনআইএ) তাকে গরু-খোঁজার মতো খুঁজছিল।
গত বছর মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে তিন জঙ্গি গ্রেফতারের পরেই এ রাজ্যে আল কায়দার ওই সংগঠনের অস্তিত্ব সামনে আসে। তার পরে এ রাজ্যের এসটিএফ একাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করেই তালহার কথা প্রথম জানা যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশের ব্লগার খুনের পরে সেখানকার পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বছর জুলাইতে বেঙ্গালুরু থেকে ফয়জল নামে এক বাংলাদেশি জঙ্গিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। তাকে জেরা করে হাসনাত খান এবং মনিরুদ্দিন খান নামে আল কায়দার দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার হয়। তাদের কাছ থেকেও গোয়েন্দারা তালহার কথা জানতে পারেন।
জানা যায়, বাংলাদেশে ব্লগার খুনের পরে ২০২০ সালের পরে তালহা সীমান্ত টপকে এ দেশে এসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে ছিল। এক পুলিশ কর্তা জানান, তালহার এ দেশে ডান হাত মুফাক্কির হোসেনকে এনআইএ গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে জানা যায়, তালহা এখানকার ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়েছে। পুলিশের ধরপাকড়ের বহর দেখেই তালহা আবার বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত মাসে গুজরাত পুলিশ আল কায়দার সদস্য কয়েক জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে কলকাতা পুলিশ জানতে পারে, তালহা-ই তাদের রিক্রুট করেছে। সে বাংলাদেশে রয়েছে। এর পরেই বাংলাদেশ পুলিশকে সব বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়। লালবাজার সূত্রের খবর, তালহা তার নিজের ও স্ত্রীর নামে ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়েছিল। বাংলাদেশ পুলিশ তাদের কাছে থেকে ভারতীয় আধার কার্ড এবং পাসপোর্ট উদ্ধার করেছে বলে সূত্রের খবর।