তীব্র দাবানলে পুড়ছে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। ফাইল চিত্র।
সালটা ছিল ১৯৭৭। সে বার গরমের মরসুমে আথেন্সের পারদ ছুঁয়েছিল ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত দিন সেটাই ছিল ইউরোপের কোনও শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ৪৪ বছর পরে অবশ্য সেই রেকর্ড ভেঙেছে। চলতি বছরে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড গড়েছে ইউরোপ। তবে এ বার গ্রিসের কোনও শহর নয়। গত পরশু ইটালির সিসিলির তাপমাত্রা ছিল ৪৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরই মধ্যে ব্রিটেনের আবহবিদেরা আরও আশঙ্কার খবর শুনিয়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপে তাপমাত্রার পারদ ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে। জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তনকেই এর জন্য দায়ী করেছেন আবহবিদেরা।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তীব্র দাবদাহ চলছিল গ্রিস, তুরস্ক, আলজিরিয়ার মতো ইউরোপের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাংশের কয়েকটি দেশে। মূলত উত্তর আফ্রিকা থেকে আসা গরম হাওয়াই ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী এই সব দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলেছে। সূর্যের প্রবল তাপে বনাঞ্চলে আগুন ধরে এই তিন দেশেই ভয়াবহ আকার নিয়েছিল দাবানল। আলজিরিয়ায় ইতিমধ্যেই ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রিস থেকেও আগুন নেভাতে গিয়ে মৃত্যুর খবর এসেছে। গ্রিস সরকার জানিয়েছে, দু’সপ্তাহের মধ্যে তাদের দেশে কমপক্ষে এক লক্ষ হেক্টর বনাঞ্চল পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে একাধিক জনবসতি। দাবানলের তালিকায় এ বার যোগ হয়েছে ইটালির নামও। গত কয়েক দিন ধরে পুড়ছে দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চল। আগুন লাগা সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই চার জনের মৃত্যু হয়েছে ইটালিতে।
ইটালির পাশাপাশি প্রবল তাপপ্রবাহ চলছে স্পেন আর পর্তুগালেও। ব্রিটেনের আবহওয়া দফতরের আধিকারিক, অধ্যাপক পিটার স্কট জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগের এক গরমে ফ্রান্সে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘খুব দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই আবহাওয়ার এই চরম নিদর্শন দেখতে পাচ্ছি আমরা। এর পর ইউরোপের কোনও শহরে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। খুব শীঘ্রই হয়তো সিসিলির রেকর্ড ভাঙবে অন্য কোনও শহর।’’