সুলতান মামুদের সমাধিস্থল। ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় চারশো বছর আগে বিজাপুরের ইতিহাসবিদ মুহম্মদ কাশিম ফিরিশতা গজনির সুলতান মামুদের সোমনাথ মন্দির ধ্বংস প্রসঙ্গে লিখেছিলেন, ‘নেহাতই এক নির্বোধ, লোভী দস্যুর গোঁয়ার্তুমি।’ কিন্তু একবিংশ শতকে আফগানিস্তানের তালিবান শাসকদের কাছে মামুদের লুঠপাট আর মন্দির ধ্বংসের কাজ গৌরবের! আর সে কারণেই প্রায় ১,১০০ বছর আগেকার সেই প্রসঙ্গ টেনে ওই শাসকের সমাধিস্থল (মাজার) সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা।
আফগান তালিবান নেতা তথা হক্কানি নেটওয়ার্কের অন্যতম মুখ আনাস হক্কানি মঙ্গলবার সুলতান মামুদের হাতে সোমনাথ মন্দির ও দেবমূর্তি ধ্বংসের কথা বলেন। মামুদের সমাধিস্থল পরিদর্শনের পরে পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ ওই তালিবান নেতার টুইট, ‘আজ, আমরা সুলতান মামুদ গজনভির মাজার পরিদর্শন করেছি। তিনি এক জন বিখ্যাত মুসলিম যোদ্ধা এবং দশম শতাব্দীর মুজাহিদ। তিনি গজনি থেকে এই অঞ্চলে একটি শক্তিশালী মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং সোমনাথের দেবমূর্তি ধ্বংস করেন।’ সুলতান মামুদকে ‘দশম শতাব্দীর মুজাহিদ (ধর্মযোদ্ধা)’-ও বলেন হক্কানি নেতা।
জনশ্রুতি, আফগানিস্তানের তুর্কি শাসক সুলতান মামুদ গজনভি ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেছিলেন। বার বার হানা দিয়ে গুজরাতের সোমনাথের মন্দিরের ধনরত্ন লুঠের পাশাপাশি ধ্বংসও করেছিলেন ওই দেবস্থান। স্বাধীনতার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই পটেল সোমনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
১০৩০ সালে গজনিতেই মৃত্যু হয়েছিল মামুদের। তাঁর সমাধিস্থলের উপর গড়ে তোলা হয়েছিল মাজার। কিন্তু দীর্ঘ দিন সেটি সংস্কার করা হয়নি। প্রসঙ্গত, কিছুদিন সুলতার মামুদের সভাসদের দায়িত্ব পালন করা আবুল ফজল বৈহাকিও পরবর্তী কালে তাঁর রচনায় বার বার ‘হিন্দুস্থানে’ হানাদারির সমালোচনা করেছিলেন। যদিও সে দর্শন মানতে নারাজ একদা বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তি ধ্বংসকারী তালিবান।