ফাইল চিত্র।
কাবুলে একটি দায়িত্বশীল সরকার গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তালিবান। এ জন্য ভারত-সহ বিশ্বের সব দেশের কাছে তারা সহযোগিতার আর্জি জানাচ্ছে। কিন্তু নতুন সরকার যে পাকিস্তান-পন্থী হবে, ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে শুরু করে সর্ব ক্ষেত্রে ইসলামাবাদকে অগ্রাধিকার দেবে— সে বিষয়ে কোনও লুকোছাপা করছে না তালিবান। জঙ্গি বাহিনীর মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদের সাফ কথা, “পাকিস্তান আমাদের আর এক বাড়ি। পাকিস্তান তালিবানের জন্ম দিয়েছে। তাদের বিষয়টা সব সময়েই আলাদা। পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবান-শাহির সহ সময়েই বিশেষ সম্পর্ক থাকবে। আফগানিস্তানের মাটিতে আমরা পাকিস্তান-বিরোধী কোনও তৎপরতা চালাতে দেব না।”
বৃহস্পতিবার ভারত ও পাকিস্তানের অনেকগুলি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন জ়বিউল্লা। সেখানেই তিনি বলেন, “২০ বছর যুদ্ধ করে ধ্বংসের মুখে চলে গিয়েছে আমাদের দেশ। এখন শান্তি প্রয়োজন আফগানিস্তানের। বিধ্বস্ত দেশকে সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা ভারত-সহ সব দেশের সাহায্য চাই।” তবে পাকিস্তানের স্বার্থ-বিরোধী একটি কাজও তালিবান যে করবে না, সে কথা ঘোষণা করেন জ়বিউল্লা। এমনকি ব্যবসা বাণিজ্য ও অন্য ক্ষেত্রে তাদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে অন্য দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে তালিবান শাসিত আফগানিস্তান জড়াবে না বলে ঘোষণা করেছেন জ়বিউল্লা। তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি আলোচনায় বসে বকেয়া সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলুক, আমরা এটাই চাই। আলোচনাই একমাত্র যুক্তিগ্রাহ্য পথ।”
তালিবানের এই ঘোষণায় অবশ্য একেবারেই অবাক নয় ভারত। বরং এই অবস্থানই তালিবানের পক্ষে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন দিল্লির কর্তারা। তালিবান তাই যতই সহযোগিতার আর্জি জানাক, এখনই তাদের সঙ্গে গলাগলি করাটা ঠিক হবে বলে মনে করছে না দিল্লি। বিশেষ করে কন্দহর বিমান অপহরণের ঘটনা ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা ভুলতে পারেন না। তেমন কাণ্ড আবার ঘটুক, সেই সুযোগ তালিবানকে আর দিতে চায় না দিল্লি। তাই ভারতীয়দের উদ্ধার অভিযান শেষ হলে আপাতত কাবুলে নিয়মিত উড়ান বন্ধ রাখার কথাই ভেবেছে ভারত সরকার। এখনই কিছু ঘোষণা করছে না দিল্লি। তবে তালিবান শাসিত কাবুলে যাওয়ার পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া নিয়ে তারা সন্দিগ্ধ। সেই যুক্তি দিয়েই বিমান বন্ধ করা হতে পারে। তবে মূল কারণ অবশ্যই কন্দহর অপহরণের পুনরাবৃত্তি ঠেকানো।