প্রতীকী ছবি।
আগামিকাল, অর্থাৎ ১ মে থেকে আফগানিস্তানে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা সম্প্রতি ঘোষণা করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ বছর ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সেই প্রক্রিয়া তারা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বলে জানাল ওয়াশিংটন। ধাপে ধাপে সামরিক সরঞ্জাম ও সেনা সরিয়ে আনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে গত দু’সপ্তাহে কাবুল ও একাধিক আফগান প্রদেশে তালিবান হামলা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি সতর্ক আমেরিকা। পেন্টাগন জানিয়েছে, প্রক্রিয়াটি শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ করাই তাদের লক্ষ্য। তাই বাহিনীর সুরক্ষায় বায়ুসেনার দু’টি বি-৫২ বোমারু বিমান আফগানিস্তানে গিয়েছে। বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ডোয়াইট ডি. আইজ়েনহাওয়ার-সহ নৌবহর আপাতত পশ্চিম এশিয়ায় থাকছে।
২০০১ সালে আমেরিকার সেনার তৎপরতায় আফগানিস্তানে তালিবান জমানার অবসান ঘটে। তার পর থেকে একাধিক বার আফগান সরকার ও তালিবানের মধ্যে শান্তি-চুক্তির জন্য মধ্যস্থতা করেছে আমেরিকা। কাতারে সেই শান্তিচুক্তির একাধিক বৈঠক হলেও সমস্যা মেটেনি। শেষে গত বছর দোহা চুক্তি অনুযায়ী ঠিক হয়, আমেরিকা পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। এই সময়ের মধ্যে বিদেশি সেনাবাহিনীর উপরে কোনও হামলা হবে না বলে কথা দেয় তালিবান। একই সঙ্গে তারা হুঁশিয়ারি দেয়, সেই প্রক্রিয়া ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। কোনও রকম দেরি বরদাস্ত করা হবে না।
সেই সময় যত ঘনিয়ে আসছে, দেশে তালিবানের সক্রিয়তা তত বাড়ছে। আফগান সেনাবাহিনীর এক আধিকারিকের কথায়, বিদেশি শক্তি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতা দখল করতে হামলা চালাচ্ছে তালিবান। সেনা সূত্রের খবর, গত দু’সপ্তাহে অন্তত ৬টি আত্মঘাতী হামলা, ৬৫টি বিস্ফোরণ, একাধিক ব্যক্তিকে নিশানা করে খুন করেছে জঙ্গিরা। ওই সমস্ত হামলায় অন্তত ১২০ জন আফগান সেনা নিহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জন সাধারণ নাগরিকের। সেনার পাল্টা হামলায় ৩০০ তালিবান জঙ্গির মৃত্যুর খবর মিলেছে। জখম বহু।
আফগানিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান আহমেদ জিয়া সিরাজ বলেন, সম্প্রতি ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ সন্ত্রাস চালাচ্ছে তালিবান। তবে সরকারের এই দাবি খারিজ করেছে তালিবানের মুখপাত্র জ়াবিউল্লাহ মুজাহিদ।
সে দাবি করেছে, সাধারণ মানুষের উপরে আফগান সেনাবাহিনীই হামলা চালিয়েছে।