আশরফ গনি। নিজস্ব চিত্র।
তলোয়ার এবং বন্দুকের মুখে দেশের ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। আফগানিস্তানে পালাবদল নিয়ে এমনটাই মত সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির। রবিবার আফগানিস্তানের সীমান্ত ত্যাগ করার পরেই নেটমাধ্যমে দেশবাসীকে এই বার্তা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, তালিবান শাসকদের দেশবাসীর সম্ভ্রম, সম্পত্তি এবং আত্মমর্যাদা রক্ষার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আফগানিস্তান ছেড়ে তাজিকিস্তানে রওনা দিয়েছিলেন গনি। কিন্তু তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছে দুশানবে। বিমান ঘুরিয়ে ওমান পৌঁছেছেন গনি। তবে ওমান সরকার তাঁকে আশ্রয় দিতে রাজি কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এমন দোলাচলের পরিস্থিতিতেই দেশবাসীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গনি। দেশত্যাগের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে নেটমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। হয় আমাকে সশস্ত্র তালিবানদের মুখোমুখি হতে হত অথবা আমার প্রিয় স্বদেশ ত্যাগ করতে হত। এই দেশকে গত ২০ বছর ধরে রক্ষা করতে আমি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি। যদি আমার দেশের অগণিত মানুষ শহিদ হতেন, তা হলে তার ফল হত ৬০ লক্ষ মানুষের এই শহরের ধ্বংসপ্রাপ্তি। তালিবান আমাকে সরিয়েছে, কারণ তারা এসেছে কাবুল এবং কাবুলের বাসিন্দাদের আক্রমণ করতে। তাই রক্তপাত এড়াতে আমার মনে হয়েছে চলে যাওয়াই শ্রেয়।’
আফগানিস্তানের পালাবদলের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গনি বলেছেন, ‘তালিবান তলোয়ার এবং বন্দুকের মুখে ফয়সালা করেছে। এখন তারাই দেশবাসীর সম্ভ্রম, সম্পত্তি এবং আত্মমর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব নেবে। তারা মানুষের মন জয় করে ক্ষমতায় আসেনি। ইতিহাস ফাঁপা শক্তিকে কখনই বৈধতা দেয়নি বা দেবেও না। তারা ইতিহাসের নতুন পরীক্ষা দিচ্ছে। হয় তারা আফগানিস্তানের নাম এবং সম্ভ্রম রক্ষা করবে, অথবা তারা অন্য কিছুকে গুরুত্ব দেবে।’
দেশের নাগরিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গনির বক্তব্য, ‘বহু মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁরা ভবিষ্যৎ নিয়েও আশঙ্কায়। বিভিন্ন উপজাতির মানুষ, নারী এবং দেশকে আশ্বস্ত করার দায়িত্ব তালিবানকেই নিতে হবে। মানুষের মন জয় করার জন্য তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে।’ প্রয়োজনে তিনি নয়া শাসকদের পরামর্শ দেবেন বলেও উল্লেখ করেছেন ওই বার্তায়।