লিন ও’ডয়েল ফাইল ছবি
কিশোরীদের জোর করে বিয়ে করা থেকে শুরু করে অল্প বয়সি মেয়েদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার, কিছুই বাদ নেই তালিবানি রাজত্বে— এমন অভিযোগ তুলে কলম ধরায় ‘ফরেন পলিসি’ নামে এক বিদেশি পত্রিকার এক সাংবাদিককে আটক করল তালিবান। দিন তিনেক বন্দি রাখার পরে জোর করে লিন ও’ডয়েল নামে ওই সাংবাদিককে চাপ দিয়ে তাঁর বক্তব্য ফিরিয়ে নিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো হয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর। যার ‘পুরস্কার’ হিসেবেই মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
‘তালিবানি কমান্ডারেরা কিশোরী মেয়েদের জোর করে বিয়ে করছে, কিশোরীদের যৌনদাসী করে রাখা হচ্ছে, এমন বিষয়ে আমার লেখা তিন থেকে চারটে প্রতিবেদনের জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি...’— ওই অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের টুইটারে হঠাৎ ভেসে ওঠা এই বার্তা দেখে চমকে গিয়েছিলেন অনেকেই। আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে পাকিস্তানে এসে অবশ্য এক বিবৃতি দিয়ে লিন জানিয়েছেন, ওই বার্তা দেওয়ার জন্য তাঁকে জোর করা হয়েছিল তালিবানের তরফে। সেই প্রসঙ্গে লিনের টুইট, ‘‘টুইটারে ক্ষমা চেয়ে নিন নয়তো জেলে যান, যেটা মনে হয় করুন: বলেছিলেন তালিবান গোয়েন্দারা। আমি টুইট করলাম। প্রথমটা পছন্দ হয়নি। ডিলিট করলাম, এডিট করলাম, রি-টুইট করলাম। আমার একটা ভিডিয়োও বানানো হয়, যেখানে আমাকে বলতে বলা হয় যে এর জন্য আমাকে কোনও রকমের চাপ দেওয়া হয়নি। সেটাও বারবার শুট করতে হয়েছে।’’
তবে শুধু কিশোরীদের যৌন হেনস্থার ছবিই তুলে ধরেননি লিন। আফগানিস্তানে রূপান্তরকামীদের নিয়েও লিখেছিলেন তিনি। যার জন্যেও তালিবানি রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। কারণ রূপান্তরকামীদের স্বীকৃতি দিতে রাজি নয় তালিবান প্রশাসন। লিনের মন্তব্য, ‘‘তালিবানের দাবি, তাদের দেশে তৃতীয় লিঙ্গের কোনও অস্তিত্বই নেই।’’
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন যুদ্ধ-সাংবাদিক লিন গত ২০ বছরে বহু বার আফগানিস্তানে গিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন। তবে এ বার চরম হেনস্থার শিকার হতে হয় তাঁকে। যার জেরে সে দেশ থেকে বেরিয়ে তড়িঘড়ি পাকিস্তানে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তালিবান সরকারের তরফে অবশ্য এখনও এই নিয়ে মুখ খোলা হয়নি।