‘তালিবানি শাসনে স্বাধীন থাকব তো’

সামনে ধোঁয়া ওঠা কফির কাপ, সঙ্গে পছন্দের গান। কাবুলে এমনই একটি ঝাঁ চকচকে ক্যাফে চালান বছর তিরিশের মিনা রেজাই। কিন্তু আগামী দিনেও এই স্বাধীনতা থাকবে তো? 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাবুল শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১১
Share:

আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা সরলে এই চিত্র দেখআ যাবে তো?—ছবি এএফপি।

সামনে ধোঁয়া ওঠা কফির কাপ, সঙ্গে পছন্দের গান। কাবুলে এমনই একটি ঝাঁ চকচকে ক্যাফে চালান বছর তিরিশের মিনা রেজাই। কিন্তু আগামী দিনেও এই স্বাধীনতা থাকবে তো?

Advertisement

একই প্রশ্ন রেস্তরাঁ মালিক লায়লা হায়দারির। আফগানিস্তানের রাজধানীতে হাতেগোনা যে কয়েকটি রেস্তরাঁয় নারী পুরুষ পাশাপাশি বসে খেতে পারেন, তেমনই একটি রেস্তরাঁ চালান লায়লা। আগামী দিনে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা সেনা সরালে শান্তি ফিরুক না-ই বা ফিরুক, তালিবান শাসন যে আরও জাঁকিয়ে বসবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। আর তখন তাঁদেরকেই যে স্বাধীনতা জলাঞ্জলি দিতে হবে সে বিষয়ে এক রকম নিশ্চিত লায়লারা।

আফগানিস্তান থেকে আংশিক ভাবে সেনা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। সেই মতো দিন ছয়েক আগে কাতারে বৈঠক ডেকে শান্তিচুক্তির খসড়া তৈরিতে সম্মত হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন ও তালিবান প্রতিনিধিরা। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মহিলারা। তাঁদের আশঙ্কা, মার্কিন সেনা সরলেই তালিবান আসল চেহারা দেখাবে।

Advertisement

২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। তার আগে পাঁচ বছর কট্টর তালিবানি শাসন জারি ছিল দেশে। তখন মেয়েদের অবস্থাটা ঠিক কেমন ছিল মনে করলেই শিউরে ওঠেন জাঘোরি প্রদেশের বাসিন্দা, বছর পঁচিশের নাভিদা বয়াত। বললেন ‘‘আমাদের চোখের সামনে স্কুলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল তালিবান জঙ্গিরা। আমি তখন খুবই ছোট। কিন্তু এখনও স্পষ্ট মনে আছে।’’

মার্কিন সেনা আসার পরে দেশে মেয়েদের অবস্থা অনেকটাই বদলেছে বলে মনে করেন কাবুলের সমাজকর্মী ও গবেষক হিদার বার। রাষ্ট্রপুঞ্জের সমীক্ষায়, এখন দেশের ৮০ লক্ষ স্কুলপড়ুয়ার মধ্যে অন্তত ২৫ লক্ষ মেয়ে। পার্লামেন্টে মোট আসনের চার ভাগের এক ভাগ মহিলাদের দখলে। ২০১৬-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে পাঁচ ভাগের এক ভাগ রোজগেরে এই মেয়েরাই। গত দু’দশকে খানিকটা হলেও সুর নরম হয়েছে তালিবানের।

তবে এই সব বদল সত্ত্বেও নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আফগানিস্তান এখনও অনেক পিছিয়ে বলেই মত অধিকাংশের। তবে যেটুকু স্বাধীনতা পেয়েছেন তা কোনও ভাবেই হারাতে চান না আফগান আধুনিকারা। পার্লামেন্টের মহিলা ও মানবাধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য ফৌজিয়া কুফি বললেন, ‘‘আজকের আফগান মেয়েরা তো বটেই, পুরুষেরাও চান না আগের অবস্থা ফিরে আসুক’’। সমাজকর্মী আত্তিয়া মেহেরবান বললেন, ‘‘অন্য সকলের মতো আমিও চাই দেশে শান্তি ফিরুক। কিন্তু তার থেকেও বেশি করে চাই স্বাধীনতা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement