India

পাক-বিরোধী তালিবানের সঙ্গে কৌশলী যোগ

আফগানিস্তান সরকারের সঙ্গেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রেখে সে দেশের যুদ্ধ-পরবর্তী পুর্নগঠনের কাজ চালিয়েছে নয়াদিল্লি।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২১ ০৬:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

উপায়ান্তর না-দেখে আফগানিস্তানে তালিবানের একটি অংশের সঙ্গে সংযোগের দরজা খুলল ভারত। কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ভারতের এত দিনের কাবুল-নীতির থেকে অনেকটাই আলাদা বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু মোদী সরকারই নয়, পূর্বতন মনমোহন সিংহ বা অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারও কখনওই তালিবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার দরজা খোলেনি। আফগানিস্তান সরকারের সঙ্গেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রেখে সে দেশের যুদ্ধ-পরবর্তী পুর্নগঠনের কাজ চালিয়েছে নয়াদিল্লি।

সূত্রের খবর, আলোচনার এই সূত্রপাতকে বিদেশ মন্ত্রকের আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক দৌত্য বলা চলে না। দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্তারা যোগাযোগ করেছেন তালিবানের এমন একটি অংশের সঙ্গে, যারা পাকিস্তান বা ইরান দ্বারা প্রভাবিত নয়। জানা গিয়েছে, তালিবান শীর্ষ নেতা মোল্লা বরাদরের সঙ্গেও সংযোগ করা হয়েছে। মোল্লা বরাদর আফগান-তালিবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়োর সঙ্গে সে দেশে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে চুক্তি করেছিলেন এই বরাদর। পাকিস্তান তথা আইএসআই-বিরোধী তিনি। তালিবান ক্ষমতায় থাকার সময় (১৯৯৬-২০০১)বহু পদে থেকেছেন। পাকিস্তান ২০১০ সালে তাঁকে করাচিতে গ্রেফতার করে। ২০১৮ সালে মুক্তির পর এখন তিনি দোহা থেকে সরকার এবং আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।

Advertisement

তালিবানের এই ‘বিশেষ’ অংশের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করা, কিছুটা ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার’ নীতি বলেই মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি আমেরিকা সফরকালে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়ে এসেছেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে যেন তাড়াহুড়ো না-করে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা যে সরাসরি যুক্ত, এটা বারবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরতে চেয়েছে সাউথ ব্লক। আফগানিস্তানে তালিবানি হিংসা ফিরলে এবং চিনের মদতে ইসলামাবাদ তার প্রধান কান্ডারি হলে, নয়াদিল্লির কাছে তা দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়।

কিন্তু এ কথাও ভারতের অজানা নয় যে, তাদের অনুরোধ মেনে, কাবুল নিয়ে এক ইঞ্চি পদক্ষেপও করবে না বাইডেন প্রশাসন। তারা চলবে নিজেদের জাতীয় স্বার্থের নিরিখে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে আমেরিকার সেনা সরে গেলে ইসলামাবাদ যাতে কাবুলে ছড়ি ঘোরাতে না-পারে, সেজন্য কিছুটা মরিয়া হয়েই খোদ তালিবানের এইবিশেষ অংশের সঙ্গে যোগযোগ রাখার এই সিদ্ধান্ত।

তবে গোটা বিষয়টিই অত্যন্ত প্রাথমিক স্তরে রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এখনও দু’পক্ষে আনুষ্ঠানিক কোনও বৈঠক হয়েছে কি না, স্পষ্ট নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement