ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
পেনসিলভেনিয়ার বাটলার শহরটি এখন রাতারাতি শিরোনামে। পূর্ব আমেরিকার এই প্রদেশ এমনিতে ‘সুইং স্টেট’, অর্থাৎ এখানকার ভোটারেরা কখনও রিপাবলিকান দলকে, কখনও বা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দেন। কিন্তু বাটলার শহরের চারপাশের এলাকায় রিপাবলিকান পার্টির জনপ্রিয়তা প্রবল। তাই এই শহরকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনসভার জন্য। শনিবার দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন এসেছিলেন ট্রাম্পের বক্তৃতা শুনতে। বেশ উৎসবের আবহাওয়া ছিল চারপাশে।
২০ বছর বয়সি একটা ছেলের স্বংয়ক্রিয় রাইফেল থেকে ছুটে আসা একাধিক গুলি মুহূর্তে পাল্টে দিল পরিস্থিতি। তাঁদের নেতার উপরে এ রকম হামলার একটা ঘটনা চোখের সামনে দেখার পরে কী ভাবছেন রিপাবলিকান পার্টির সমর্থকরা? আজ মিলওয়াকিতে শুরু হওয়া রিপাবলিকান দলের জাতীয় সম্মেলনে পেনসিলভেনিয়ার প্রতিনিধিদের চেয়ারম্যান জিম ওয়ার্থিংটন বললেন, ‘‘এই ঘটনাটি ট্রাম্পের সমর্থনে বিস্ফোরণ ঘটাবে। এত দিন সমর্থকেরা ট্রাম্পের পিছনে ছিলেন। এখন সমস্ত শক্তি দিয়ে, নিজেদের উজাড় করে তাঁকে সমর্থন করবেন।’’
আসন্ন প্রেসিডেন্ট ভোটে শনিবারের হামলার ঘটনা কী ভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে স্থানীয় রেডিয়োয় রাজনীতি বিশ্লেষক ক্রিস পটারের বক্তব্য শুনছিলাম। তাঁর কথায়, ‘‘বাটলার এবং তার কাছাকাছি অঞ্চল থেকে ২০১৬ এবং ২০২০, দু’বারই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে অনেক বেশি ভোট পেয়েছিলেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলি এখানকার মানুষদের কাছে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক।’’ আসলে পেনসিলভেনিয়ার অন্যতম বৃহত্তম ও জনবহুল শহর পিটসবার্গ থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে হলেও বাটলার চরিত্রগত ভাবে পিটসবার্গের থেকে অনেকটাই আলাদা। পিটসবার্গের চারপাশের এলাকা অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত হলেও বাটলারের চারপাশে মূলত কৃষিজমি, বন্ধ কিছু কলকারখানা ও বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়লাখনি রয়েছে। তাই ট্রাম্প যখন জীবাশ্ম জ্বালানির সমর্থনে কথা বলেন, চিন থেকে আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞার প্রতিশ্রুতি দেন, বেআইনি অভিবাসন বন্ধ করবেন বলেন, সেটা এই অঞ্চলের মানুষজনের কাছে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হয় এবং তাঁরা ট্রাম্পের বক্তৃতায় অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ হন।
শনিবারের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির কট্টর সমর্থক রিক ইভ্যানসিং। তিনি জানালেন, জনসভায় বহু মানুষ এসেছিলেন, কিন্তু কোথাও হিংসার কোনও চিহ্ন ছিল না। বরং বেশ একটা উৎসব-অনুষ্ঠানের পরিবেশ ছিল। তাই হঠাৎ করে ট্রাম্পের উপরে যে এ রকম একটা হামলা হতে পারে বা আততায়ীর গুলিতে এক জন নির্দোষ মানুষের প্রাণ চলে যেতে পারে, এ সব কিছুই ছিল চিন্তার বাইরে।
ট্রাম্প-সমর্থকেরা এক বাক্যে বলছেন যে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সব সময়ে নানা মিথ্যা অভিযোগ করা হয় কিন্তু তিনি সব সময়ে সেই অভিযোগগুলিকে হারিয়ে, জয়ী হয়ে, বেরিয়ে আসেন। এ বারও যে ঠিক তা-ই হতে চলেছে, সে বিষয়ে তাঁদের মনে কোনও সন্দেহ নেই।