ভৈরবপুজোর শোভাযাত্রায় ভিড় উপচে পড়ল। রবিবার বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
ছুটির দিনেও দুপুর গড়াতেই ভৈরবের বিসর্জনে মেতে উঠল গোটা বহরমপুর শহর। এ দিন দুপুরে খাগড়া ভৈরবতলার ভৈরব পুজোর বিসর্জন হয়। বিকেলে বেরোয় সৈদাবাদ নিমতলার ভৈরব। বিসর্জন ঘিরে শহরবাসীর উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো বেশি।
এ দিন দুপুরের পর থেকে বহরমপুরের ব্যস্ত খাগড়ার রাস্তায় জনতার ঢল নামে। বাতাসা বৃষ্টি ও চকোলেটের ‘বৃষ্টি’ শুরু হয়। সে সব কুড়নোর জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বিসর্জন উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছিল। শহর জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশ। অবাঞ্ছিত ঘটনা রুখতে তৎপর ছিল পুলিশ ও প্রশাসন। পুরসভার দাবি, গঙ্গার ঘাটগুলিতেও ছিল পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। ভৈরব পুজো বহরমপুরের ঐতিহ্যের পুজো। দুর্গাপুজোর পর এই পুজো ঘিরেই সবচেয়ে বেশি মাতামাতি দেখা যায়। বহরমপুরের বাসিন্দা সুজয় সরকার বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে ভৈরব পুজো ঘিরে যে উন্মাদনা দেখা যেত, যত দিন যাচ্ছে তার মাত্রা বাড়ছে। সেই কারণে রাস্তায় এত মানুষের ঢল দেখে অবাক হইনি।’’ বহরমপুরের বাসিন্দা শিবনাথ দাস বলেন, ‘‘আমি কর্মসূত্রে জেলার বাইরে থাকি। ভৈরবপুজোয় প্রতিবার বাড়ি আসি। ভৈরব পুজোতেও নতুন পোশাক কেনার চল রয়েছে।’’
এ বার দেড়শো বছরে পা দিল খাগড়া ভৈরবতলার পুজো। সৈদাবাদ নিমতলাপাড়া ভৈরব পুজো কমিটির সভাপতি চন্দন দাস বলেন, ‘‘আমাদের ভৈরব পুজো কবে শুরু হয়েছিল, তা জানা নেই। পুজোর শোভাযাত্রায় রয়েছে শান্তিপুরের গেট, বাজনা, কলকাতার ব্যান্ডপার্টি।’’ নিমবাবাকে ঘিরে শহরবাসীর উন্মাদনা কম থাকে না। বাতাসা, লজেন্স ‘নিমবাবা’র উদ্দেশে দেওয়া হয়। এই পুজোর ভৈরব সৈদাবাদ রাজবাড়িঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয়। সৈদাবাদ থেকে কুঞ্জঘাটা হয়ে ঘাটবন্দর, কল্পনার মোড়, কাদাই, খাগড়া চৌরাস্তা মোড় হয়ে সৈদাবাদ রাজবাড়ি ঘাটে শোভাযাত্রা পৌঁছয়। খাগড়া ভৈরবতলার ভৈরব পুজো কমিটির সদস্য সুশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘এ বার আমাদের পুজো ১৫০ বছরে পড়ল। তাই পুজোর বিসর্জনেও ভিড় ছিল বেশি। ভৈরবতলা থেকে কল্পনা মোড়, চৌরাস্তা হয়ে বিসর্জন হয় ভৈরবতলা ঘাটে। দু’জন ভৈরব সেজে হাজির ছিলেন শোভাযাত্রায়।’’ বহরমপুরের উপ পুরপ্রধান স্বরূপ সাহা বলেন, ‘‘বিসর্জন উপলক্ষে ঘাটগুলিতে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘাটে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলোর ব্যবস্থা ছিল।’’