ভোরে ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে হাজির হচ্ছে পড়ুয়ারা। ছবি: সংগৃহীত।
ঢুলু ঢুলু চোখে স্কুলের পথে হেঁটে চলেছে পড়ুয়ারা। আধো ঘুমে পিঠে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে পৌঁছতে হচ্ছে ভোর সাড়ে ৫টায়। পড়ুয়াদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ জাগিয়ে তুলতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত! আর এই সিদ্ধান্তই এখন বড় প্রশ্নের মুখে। প্রশ্ন উঠছে, এর সঙ্গে শৃঙ্খলাবোধের কী সম্পর্ক? শৃঙ্খলাবোধ জাগিয়ে তোলার নামে এটি এক ধরনের ‘শাস্তি’ নয় কি?
না, এই সিদ্ধান্ত ভারতের কোনও রাজ্য, শহর বা গ্রামের নয়। পড়ুয়াদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ জাগিয়ে তোলার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার কুপাঙে। এই শহরে ১০টি উচ্চবিদ্যালয় রয়েছে। সেই বিদ্যালয়ে পাইলট প্রকল্প হিসাবে ভোর সাড়ে ৫টায় স্কুল শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। আর এই নির্দেশ ঘিরেই তোলপাড় চলছে ইন্দোনেশিয়ায়।
সাধারণত, ইন্দোনেশিয়ায় সব স্কুল শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল ৭-৮টার মধ্যে। কিন্তু সেই সময়কে আরও এগিয়ে নিয়ে এসেছে ইস্ট নুসা তেঙ্গারা প্রদেশের রাজধানী কুপাং। এই প্রদেশের গভর্নর ভক্টির লাইসকোডাট গত মাসেই ঘোষণা করেছিলেন, পড়ুয়াদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। আর এই শৃঙ্খলাবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য সময়ানুবর্তিতা হওয়া উচিত। তাই শৃঙ্খলাবোধ বাড়ানোর জন্য স্কুলের সময় আরও এগিয়ে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন।
প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে অভিভাবক এবং ছাত্রমহলে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে। এক অভিভাবক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত মানা যায় না। আধো ঘুমে ছেলেমেয়েদের স্কুলের জন্য রওনা দিতে হচ্ছে। অন্ধকার থাকতেই তাদের বাড়ি থেকে বেরোতে হচ্ছে। আর এতে তো পড়ুয়াদের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে।” রাম্বু আতা নামে এক অভিভাবক আবার বলেছেন, “আমার মেয়েকে ভোর ৪টের সময় উঠতে হয়। স্কুল থেকে যখন ফেরে তখন খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।”
নুসা সেন্ডানা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মার্শেল রোবট বলেন, “শিক্ষার গুণগত মান এবং শৃঙ্খলাবোধ বাড়ানোর সঙ্গে ভোর সাড়ে ৫টা স্কুল শুরুর কোনও সম্পর্ক নেই। এটা হতেও পারে না। এতে আখেরে লাভের থেকে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। পড়ুয়াদের ঠিক মতো ঘুম না হলে স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়বে।”