—প্রতীকী ছবি।
শুক্রবার তাপমাত্রায় নতুন রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার চুয়াডাঙ্গা। এ দিন স্থানীয় সময় বিকেল ৩টে-য় চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া দফতর ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ১১%। তিন দিন আগে যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাকি বাংলাদেশও প্রবল তাপপ্রবাহের কবলে। জনজীবন অস্তব্যস্ত, চাষবাস শিকেয়, ফসলের ক্ষয়ক্ষতিতে কৃষকের মাথায় হাত। বাংলাদেশের প্রায় সব হাসপাতালে গরমে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা মাত্রা ছাড়িয়েছে। ঢাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশেপাশে। আগামী শনিবার পর্যন্ত দেশের সর্বত্র স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। আপাতত সিদ্ধান্ত, রবিবার স্কুল খুলবে, তবে ক্লাসঘরের বাইরে কোনও জমায়েত, প্রার্থনা বা খোলা মাঠে খেলাধুলো বন্ধ।
ভারত থেকে ট্রাকে যাওয়া বহু আলু প্রবল গরমে পচে গিয়েছে। এ সপ্তাহের প্রথমে ১৬টি ট্রাকে ৩৭০ টন আলু বেনাপোলে পৌঁছেছিল। কিন্তু তার অনেকটাই পচে গিয়েছে। অন্য পচনশীল কৃষিজ পণ্যের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দেওয়ায় ঢাকা ও অন্য বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম লাফিয়ে বাড়ছে। রাজশাহি ও চাঁপাই নবাবগঞ্জে গরমে ও শুষ্ক আবহাওয়ায় গাছ থেকে কাঁচা আম ঝরে যাচ্ছে বলে অভিযোগ চাষিদের। এ বারে আমের ফলন আবহাওয়ার কারণে মার খেতে পারে বলেও, তাঁদের আশঙ্কা।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া এ বারে পশ্চিমবঙ্গকে অতিক্রম করে যশোর থেকে রাজশাহি পর্যন্ত সীমান্ত সন্নিহিত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। পরে তা দেশের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ায় এই তাপপ্রবাহ। যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় ঢুকছে ঝাড়খণ্ডের তাপপ্রবাহ। তাই এই দুই এলাকায় সব চেয়ে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে।
প্রবল গরমে বাংলাদেশের সর্বত্রই বিটুমিন গলে সড়কে বড় ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা, যশোর, রাজশাহি তো বটেই ঢাকা, খুলনা, শরিয়তপুরের মতো এলাকাতেও গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পেটের রোগ ছড়িয়েছে। হাসপাতালগুলি এই রোগীতে ভর্তি।
সাধারণের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা বাংলাদেশের।