শেহান করুণাতিলকের হাতে বুকার পুরস্কারের ট্রফি তুলে দিচ্ছেন ব্রিটেনের কুইন কনসর্ট ক্যামিলা। মঙ্গলবার লন্ডনে। পিটিআই।
ঘুম থেকে উঠে মালি আলমাইদা দেখল— বেশ কিছু ক্ষণ আগেই মরে গেছে সে। কিন্তু মরলে চলবে কেন? অনেক কাজ বাকি। খুঁজে বার করতে হবে খুনিদের। জরুরি তথ্যপ্রমাণ পৌঁছে দিতে হবে বন্ধুদের হাতে।
এ ভাবেই শুরু হচ্ছে শ্রীলঙ্কান কথাসাহিত্যিক শেহান করুণাতিলকের লেখা ‘দ্য সেভেন মুনস অব মালি আলমাইদা’। এই উপন্যাসটি এ বছরের বুকার পুরস্কার জিতে নিয়েছে। ইংরেজি ভাষায় লেখা ব্রিটেনে প্রকাশিত কথাসাহিত্য এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়। গত কাল সন্ধ্যায় লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে শেহানের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেন দেশের নতুন কুইন কনসর্ট, রাজা তৃতীয় চার্লসের স্ত্রী ক্যামিলা।
শেহানের এটি দ্বিতীয় উপন্যাস। পটভূমি গৃহযুদ্ধে দীর্ণ ১৯৮৯-র শ্রীলঙ্কা। উপন্যাসের মূল চরিত্র চিত্রসাংবাদিক মালি। সে মনে করে, তার তোলা গৃহযুদ্ধের ছবি শ্রীলঙ্কায় শান্তি ফিরিয়ে আনবে, ঠিক যে ভাবে নাপাম-কন্যার ছবি ভিয়েতনামের যুদ্ধ বন্ধ করতে জনমত গড়ে তুলেছিল। মৃত্যুর পরে ‘পরলোকে’ যাওয়ার আগে তার হাতে মাত্র সাতটা দিন। যার মধ্যে তাকে তার তোলা ছবি খুঁজে বার করে পৌঁছে দিতে হবে বন্ধুদের কাছে।
আপাত ভাবে ‘ভৌতিক’ এই উপন্যাসটিকে শ্রীলঙ্কা-সহ দক্ষিণ এশিয়ার ‘অশান্ত সময়ের দলিল’ বলে মনে করেছে বুকারের বিচারকমণ্ডলী। গতকাল পুরস্কারগ্রহণ অনুষ্ঠানে ৪৭ বছর বয়সি শেহান বলেন, ‘‘দুর্নীতি আর ক্ষমতার মিথ্যা আস্ফালন যত দিন থাকবে, আমাদের দেশে তত দিন শান্তি ফিরবে না।’’ তবে একই সঙ্গে লেখকের আশা, ‘‘আমি চাই না, ইতিহাসের দলিল হিসেবে গণ্য করা হোক এই বইটি। তার থেকে বরং ২০ বছর পরে এই উপন্যাসের ঠাঁই হোক ‘কল্পবিজ্ঞান’-এর তাকে। আমার লেখা তা হলেই সার্থক হবে।’’