বিশ্বের অন্যতম গভীর প্রাকৃতিক বন্দর শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালি। ছবি রয়টার্স।
৯৯টি তেলের ট্যাঙ্ক ভারতকে ইজারা দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেগুলি এ বার ফেরত নেওয়ার জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তারা। বুধবার একটি বিবৃতিতে এমনটাই জানান শ্রীলঙ্কার প্রাকৃতিক শক্তি মন্ত্রী উদয়া গাম্মানপিলা। ইজারা দেওয়া তেলের ট্যাঙ্কগুলি রয়েছে শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালি বন্দরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশরা ট্যাঙ্কগুলি বানিয়েছিল। ২০০৩ সাল থেকে বছরে এক লক্ষ ডলার ভাড়ায় সেগুলি ভারতকে ইজারা দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
বিশ্বের অন্যতম গভীর প্রাকৃতিক বন্দর শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালি। ব্রিটিশরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নিজেদের কৌশলগত অবস্থান মজবুত করতে সেটি তৈরি করেছিল। সেখানকার ট্যাঙ্কগুলি ২০০৩ সালে ৩৫ বছরের জন্য ইজারা দেয় লঙ্কা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন। এই সংস্থাটি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) শ্রীলঙ্কার শাখা। এক দশক ধরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সম্পর্কের অন্যতম চাবিকাঠি এই ট্যাঙ্কগুলি। অক্টোবরেই শ্রীলঙ্কা সফরের সময়ে ত্রিঙ্কোমালি গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
২০২১ সালের শুরুতেই উদয়া গাম্মানপিলা জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই ট্যাঙ্কগুলি ফেরত নিতে চলেছে শ্রীলঙ্কা। বুধবার তিনি জানিয়েছেন, সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি আলাদা সংস্থা তৈরি করা হয়েছে। ত্রিঙ্কো পেট্রোলিয়াম টার্মিনাল লিমিটেড নামের ওই সংস্থাটি শ্রীলঙ্কার মূল তৈল সংস্থা সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেখাশোনা করবে ৯৯টি ট্যাঙ্কের।
তবে, ইজারা নেওয়া ট্যাঙ্কের হাতবদলের মধ্যেও শ্রীলঙ্কায় চোখ রাঙাচ্ছে বিদেশি মুদ্রার সঙ্কট। ভারতের থেকে ধারে অপরিশোধিত খনিজ তেল ও অন্যান্য তৈলজাত দ্রব্য আমদানির কথাও চলছে শ্রীলঙ্কার তরফে। গত নভেম্বরে অপরিশোধিত খনিজ তেল আমদানির সামর্থ্য না থাকায় দেশের একমাত্র তৈল শোধনাগার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কটের প্রভাব পড়েছে জরুরি সামগ্রী আমদানিতেও। ফলে খাদ্যশস্য-সহ বহু প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঘাটতির আশঙ্কা শুরু হয়েছে সে দেশে। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে দেশের বর্তমান প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন, তেল ও খাদ্যশস্য আমদানির বিষয়টি নিয়ে তারা যেন ভারতের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করে।