ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন ‘পলাতক’ রাজাপক্ষে? ফাইল চিত্র।
‘প্রজাপক্ষের’ বিক্ষোভে দেশ ছেড়ে এখন মলদ্বীপে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। আর তার পরেই সে দেশে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। বুধবারই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিতে পারেন বলে খবর। এখন কোথায় আশ্রয় নেবেন তিনি, তা নিয়ে চলছে জল্পনা। তবে সূত্র অনুযায়ী, দেশ ছেড়ে পালাতে প্রথমে ভারতের সাহায্য চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ভারত তা প্রত্যাখ্যান করে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে তাঁর আমেরিকার নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন রাজাপক্ষে। তাই বিক্ষোভের মুখে প্রথমে আমেরিকা যাওয়ার কথা ভাবলেও পরে বিকল্প আশ্রয়ের খোঁজ শুরু করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। তবে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি আমেরিকার ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। এমনকি, গত সোমবারই দুবাই যাওয়ার জন্য একটি উড়ানের বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগে সিল্ক রুট দিয়ে রাজাপক্ষের যাতায়াতে অনুমতি দেননি অভিবাসন কর্মীরা। তাঁর ভাই বাসিলও কলম্বো থেকে সিল্ক রুট সিল্ক ধরে দুবাই হয়ে ওয়াশিংটন পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর কাছে ছ’টি বোর্ডিং পাস ছিল। কিন্তু তিনিও যেতে পারেননি।
উল্লেখ্য, সিল্ক রুট ব্যবহার করে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পলায়নের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। শ্রীলঙ্কার একটি সূত্রের দাবি, এই পরিস্থিতিতে ভারতের সাহায্য চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। শ্রীলঙ্কা থেকে বিমানে ভারতে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে অন্য কোনও দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে রাজাপক্ষের কোনও সঙ্গীর কাছেই ভারতীয় পাসপোর্ট ছিল না। তাঁদের ভারতে যাওয়ার জন্যও সরকারের অনুমতির দরকার ছিল। কিন্তু ভারতের তরফে কোনও অনুমতিই দেওয়া হয়নি বলে কলম্বো সূত্রে খবর।
যদিও ভারতের তরফে এই পরিকল্পনা বা আলোচনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দিতে রাজি হয়নি কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে ভারতও ভাবিত। অন্য কোনও বিষয়ে ভারত নেই।
অন্য দিকে, রাজাপক্ষে বা শীর্ষ নেতারা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন এ নিয়ে একটি আবেদন দাখিল হয় শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টে। তার মধ্যেই বুধবার ভোরে মলদ্বীপে পৌঁছন তিনি। ভেলানা বিমানবন্দরে মলদ্বীপের সরকারি আধিকারিকরা তাঁকে স্বাগত জানান। শ্রীলঙ্কা জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার গভীর রাতে সস্ত্রীক দেশ ছাড়েন গোতাবায়া।
সংবাদ সংস্থার দাবি, স্থানীয় এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কলম্বো বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে গোতাবায়া দেশ ছাড়েন। শ্রীলঙ্কার এক আধিকারিক এএফপি-কে জানিয়েছেন, আন্তোনভ-৩২ বিমানে এক দেহরক্ষীকে নিয়ে দেশ ছাড়েন সস্ত্রীক প্রেসিডেন্ট।