অলহাপেরুমনা, সাজিথ, আনুরা এবং রনিল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বুধবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে শ্রীলঙ্কায় জারি হল জরুরি অবস্থা। সোমবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী তথা কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে এই ঘোষণা করেছেন। ঘটনাচক্রে, তিনি নিজেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী।
ইতিমধ্যেই পার্লামেন্টের অধিবেশন ডেকে প্রেসিডেন্ট ভোটের নিয়ম বদল হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। আগের মতো আম নাগরিকদের সমর্থনে (পপুলার ভোট) নয়, সে দেশের পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটেই আগামী ২০ জুলাই নির্বাচিত হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো শুধু মাত্র সাংসদ-বিধায়কেরা নন, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এত দিন ভোট দিতেন সে দেশের প্রত্যেক নাগরিক। এত কম সময়ের মধ্যে সেই আয়োজন কার্যত অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে তাই পার্লামেন্টের সদস্যদের ভোটের ভিত্তিতেই অন্তর্বতী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পলাতক গোতাবায়া রাজপক্ষের ছেড়ে যাওয়া প্রেসিডেন্টের কুর্সি দখলের লড়াইয়ে রয়েছেন মূলত চার জন— ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)-র প্রধান রনিলের পাশাপাশি, পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা তথা সমগি জন বলবেগয়া (এসজেবি)-র প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান সাজিথ প্রেমদাসা, প্রবীণ সাংবাদিক তথা রাজাপক্ষের দল শ্রীলঙ্কা পড়ুজনা পেরমুনা (এসএলপিপি)-র পার্লামেন্ট সদস্য ডলাস অলহাপেরুমনা এবং সিংহলী জাতীয়তাবাদী তা বামপন্থী দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি)-র নেতা আনুরা কুমারা দিশানায়েকে রয়েছেন ভোটযুদ্ধে।
২২৫ সদস্যের শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টে রাজাপক্ষের দল এসএলপিপি-র সদস্য সংখ্যা ১০০। প্রধানমন্ত্রী রনিলের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি ইউএনপি-র ১ (রনিল নিজে) এবং তালিম সংগঠন ইপিডিপির ২ সদস্য রয়েছেন পার্লামেন্টে। এসএলপিপি-র বেশ কিছু পার্লামেন্ট সদস্যও প্রকাশ্যে ছ’বারের প্রধানমন্ত্রী রনিলকে সমর্থনের ঘোষণা করেছেন। অন্য দিকে, সাজিথের দল এসজেবি-র ৫৪ পার্লামেন্ট সদস্য রয়েছেন। বৃহত্তম তামিল দল টিএনএ-র ১০ সদস্যের সমর্থনও তাঁর পাশে রয়েছে। জেভিপির-র পার্লামেন্ট সদস্য ৩ জন। এই পরিস্থিতিতে অন্য ছোট দল এবং ৪৫ জন নির্দল সদস্যের সমর্থন নির্ণায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।