রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ।
বড়দিনে লন্ডনের উইনসর প্রাসাদে ঢুকে পড়ে গ্রেফতার হওয়া সশস্ত্র যুবকটির পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। কিন্তু সন্দেহ করা হচ্ছে, সে আসলে ১৯ বছর বয়সি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক শিখ। যুবকটি গ্রেফতার হওয়ার ২৪ মিনিট আগে স্ন্যাপচ্যাটে প্রকাশ করা একটি ভিডিয়ো পেয়েছে ব্রিটেনের এক সংবাদপত্র। ওই ভিডিয়োয় একই ধরনের অস্ত্র হাতে মুখোশ পরা এক যুবককে বিকৃত গলায় বলতে শোনা যাচ্ছে, জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথকে সে খুনকরতে চায়।
উইনসর কাসল চত্বরে সশস্ত্র যুবকটি যখন গ্রেফতার হয়, তখন ওই প্রাসাদের ভিতরেই ছিলেন রানি এবং রাজপরিবারের অন্য সদস্যেরা। যুবকটির হাতে ছিল আধুনিক তির-ধনুকের মতো একটি অস্ত্র, যাকে ‘ক্রসবো’ বলে। তাকে আপাতত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আইনেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরে ব্রিটিশ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় ক্রসবো হাতে নিয়ে রানিকে খুন করার ইচ্ছা প্রকাশ করা ‘শিখ’ যুবকের ভিডিয়োর খবর। দু’টির মধ্যে যোগসূত্রের ইঙ্গিত মেলায় তদন্ত শুরু করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।
স্ন্যাপচ্যাটের ভিডিয়োয় ‘স্টার ওয়ার্স’ সিরিজ়ের কায়দার মুখোশ পরা যুবকটি বলেছিল, ‘‘যা করেছি এবং যা করব, তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি রানি (দ্বিতীয়) এলিজ়াবেথকে খুন করার চেষ্টা করব। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালা বাগে যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, এটা তাঁদের হয়ে প্রতিশোধ। যাঁরা অপমানিত হয়েছেন, জাতিগত বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাঁদের হয়েও প্রতিশোধ। আমি এক ভারতীয় শিখ। আমার নাম ছিল জসবন্ত সিংহ চৈল। আমার নাম ডার্থ জোন্স।’’ প্রসঙ্গত, স্টার ওয়ার্সের একটি চরিত্রের নাম ডার্থ ভেডার। আর সেই চরিত্রের ভয়েসওভার অভিনেতা জেমস আর্ল জোন্স। সম্ভবত দু’টি নাম মিলিয়ে ব্যবহার করেছিল যুবকটি। ভিডিয়ো-বার্তার সঙ্গেই স্ন্যাপচ্যাটে সে লিখেছিল, ‘‘যাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি বা মিথ্যে কথা বলেছি, তাদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। আপনি যদি এই ভিডিয়ো পেয়ে থাকেন, তা হলে আমার মৃত্যু আর দূরে নেই। দয়া করে যাঁরা উৎসাহী, তাঁদের সঙ্গে এটি শেয়ার করুন।’’
স্ন্যাপচ্যাট অ্যাকাউন্টটির ফলোয়ারদের কাছে ভিডিয়োটি পাঠানোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই উইনসর প্রাসাদে সশস্ত্র যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত যুবকের সাউদাম্পটনের বাড়িতেও তল্লাশি চলে। ওই বাড়ির কর্তা (যিনি ধৃতের বাবা বলে জানা যাচ্ছে) জসবীর সিংহ চৈল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর কিছু হয়েছে আমাদের ছেলের। সেটাই খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি। ওর সঙ্গে কথা হয়নি, তবে ওকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে হবে।’’