বোলপুর স্টেশনে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। —নিজস্ব চিত্র।
নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বীরভূমের দেউচা পাচামি প্রকল্পের কাজে ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মহম্মদবাজারে দেউচা পাচামির কাজ দেখতে এলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ এবং পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের সচিব পিবি সেলিম।
শুক্রবার বোলপুর স্টেশনে নেমে তাঁরা রওনা দেন মহম্মদবাজার বিডিও অফিসের দিকে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে দেউচা পাচামির কাজের অগ্রগতি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে মুখ্যসচিব, ডিজি, কাজল ছাড়াও ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, এডিজি (পশ্চিমাঞ্চল) অশোক প্রসাদ, ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) শ্যাম সিংহ, জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বৈঠকের পরে স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।
বৃহস্পতিবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে দেউচা পাচামি প্রকল্পের কাজে ধীরগতি এবং জমি অধিগ্রহণে খামখেয়ালিপনার জন্য জেলাশাসক বিধান রায়কে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসকের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দেউচা পাচামিতে কেউ কেউ কী করছে সব জানি! কার ইঙ্গিতে এ সব হচ্ছে? বীরভূম নিয়ে আগে যতটা খুশি ছিলাম, এখন ততটা নই। সাত দিন সময় দিচ্ছি। এগুলো সব সমাধান করো।” একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যখন দেউচা পাচামির জন্য জমি নিলে, খাপছাড়া করে কেন নিয়েছে? উৎপাদনের আগে যারা বঞ্চিত হয়েছে দেখে নাও। মুখ্যসচিব যে ভাবে বলবে, সে ভাবে কাজ করো।” প্রশাসনিক বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী জানান যে, তিনি মুখ্যসচিবকে বীরভূমে পাঠাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরের দিনই বীরভূমে এলেন পন্থ।
বৈঠকের আগে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, “আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করব এবং স্থানীয় আদিবাসী মানুষজনের সঙ্গে কথা বলব। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই সফর।” প্রসঙ্গত, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলামুখ কয়লা খনি প্রকল্প দেউচা পাচামির জন্য এখনও বহু মানুষ জমি দিতে রাজি হননি। যে সব জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেখানেও জমির সঠিক মূল্য এবং চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বহু আদিবাসী সংগঠন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান এবং স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করতেই মুখ্যসচিবের এই সফর।