জন্মহারও এ দেশে অস্বাভাবিক কম। গত বছর সবচেয়ে কম সংখ্যক শিশুর জন্ম হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বিয়ে করার প্রতি আগ্রহ ক্রমশ কমছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গত বছর যা রেকর্ড গড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে জন্মহারও। এতেও রেকর্ড। চিন্তায় বিশেষজ্ঞেরা। একটা গোটা দেশ বার্ধ্যকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ কিনা, অল্প বয়সিদের সংখ্যা কম, প্রবীণদের সংখ্যা বেশি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ১ লক্ষ ৯২ হাজার জন বিয়ে করেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ১০ বছর আগে ২০১২ সালে বিয়ের সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ২৭ হাজার। অর্থাৎ প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ১৯৭০ সালের পরে এই প্রথম কোনও বছর এত কম সংখ্যায় বিয়ে হয়েছে। তাঁদের ব্যাখ্যায়, বিয়ে করার প্রবণতাই কমে গিয়েছে সমাজে। ছেলেদের বিবাহের গড় বয়স ৩৩.৭ বছর। মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ৩১.৩ বছর। এতেও রেকর্ড। ছেলেদের বিয়ের বয়স ১.৬ বছর বেড়েছে। মেয়েদের ১.৯ বছর বেড়েছে। গত বছর যাঁরা বিয়ে করেছেন, তাঁদের ৮০ শতাংশেরই প্রথম বিয়ে।
জন্মহারও এ দেশে অস্বাভাবিক কম। গত বছর সবচেয়ে কম সংখ্যক শিশুর জন্ম হয়েছে। মাত্র ২ লক্ষ ৪৯ হাজার। দেশে জন্মহার বৃদ্ধির জন্য ২০০৬ সাল থেকে বাসিন্দাদের উৎসাহ দিচ্ছে সরকার। এই খাতে কমপক্ষে ২১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে তারা। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। দেশের জনসংখ্যা ক্রমশ কমছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এ ভাবে চললে জনসংখ্যা ৫ কোটি ২০ লক্ষ থেকে কমে ২০৬৭ সালে ৩ কোটি ৯০ লক্ষ দাঁড়াবে। দেশবাসীর মধ্যবর্তী বয়স দাঁড়াবে ৬২ বছর। মিডিয়ান এজ বা মধ্যবর্তী বয়স হল, যে বয়স কোনও জনগোষ্ঠীকে সমান দু’ভাগে ভাগ করে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে ৬২ বছর বয়সের উপরে জনসংখ্যা এবং ৬২-র নীচে জনসংখ্যা সমান।
কিন্তু জনসংখ্যা এ ভাবে কমছে কেন? এ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। অনেকের বক্তব্য, সন্তান মানুষ করার খরচ ক্রমবর্ধমান। আবার অনেকে বলছে, সমাজে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ভাল চাকরি পাওয়া খুব কঠিন। ভাল চাকরি পেলেও তাতে নিরাপত্তা নেই। এ দিকে, জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। চাকুরিরতা মহিলারা সন্তান ও অফিস সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই অনেকেই সন্তান নিতে চাইছেন না। সংবাদ সংস্থা