সম্ভবত দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ প্রতিরক্ষা। দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত শনাক্ত করা প্রয়োজন। এর জন্য প্রতিটি দেশই হয় দেশীয় প্রযুক্তিতে বিভিন্ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করে কিংবা অন্য দেশের থেকে কিনে প্রতিরক্ষা মজবুত করে তোলে। কোন দেশের কাছে কী ক্ষেপণাস্ত্ররোধী প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে দেখে নিন।
এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ। এটি একটি অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফ্ট প্রতিরোধ ব্যবস্থা। ১৯৯০ সালে রাশিয়ার আলমাজ সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরো এটি তৈরি করেছিল। ২০০৭ সাল থেকে রাশিয়ার সশস্ত্র সেনাবাহিনীর কাছে রয়েছে এটি।
এটি ৩ রকমের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে একসঙ্গে। এতে স্বয়ংক্রিয় চিহ্নিতকরণ এবং লক্ষ্য নির্ধারক ব্যবস্থা রয়েছে।
ডেভিড’স স্লিং। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনীর অস্ত্র। ইজরায়েল এবং আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই হাতিয়ার। ধেয়ে আসা শত্রুপক্ষের বিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট রুখে দিতে পটু এই হাতিয়ার। ইজরায়েল সেনার এমআইএম-২৩ হক এবং এমআইএম-১০৪ পেট্রিয়ট এই দুই হাতিয়ারের কাজ একাই করতে পারে ডেভিস’স স্লিং।
আকাশ। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্ররোধী ব্যবস্থা। ডিআরডিও এবং ভারত ডায়নমিকস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এটি। ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরত্বে কোনও ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করতে সমর্থ এটি। যুদ্ধবিমান, ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে এটি। ভারতীয় বায়ুসেনা এবং স্থলসেনার কাছে রয়েছে এই হাতিয়ার।
এস-৩০০ভিএম। এটিও রাশিয়ার দূরগামী অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা। আলমাজ-অ্যান্টে নামে এক সংস্থা এটি তৈরি করেছে। যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম এটি।
থর। পুরো নাম টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স। এটি আমেরিকার অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। খুব সহজেই এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া যায় এটি। ১৫০ কিলোমিটার উচ্চতা এবং ২০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করতে পারে। ১৯৯১ সালে গালফ যুদ্ধে ইরাকের স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের পর পরই থর তৈরি করে আমেরিকা।
এমআইএম-১০৪ প্যাট্রিয়ট। যে কোনও আবহাওয়ায় শত্রুপক্ষের হামলা প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত। ম্যাসাচুসেটস এবং ফ্লোরিডার দু’টি আলাদা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
হং কিউআই ৯। একে এইচকিউ ৯-ও বলা হয়। চিনের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। রাশিয়ার এস-৩০০ এর সমতুল্য এটি। ১৯৯৭ সালে প্রথম এই হাতিয়ার তৈরি হয়। মধ্য থেকে দূরবর্তী যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
অ্যাস্টার ৩০ এসএএমপি/টি। ইউরোপীয় সংস্থা ইউরোস্যাম এটি তৈরি করে। ফ্রান্স, ইটালি এবং সিঙ্গাপুরের হাতে রয়েছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
মিডিয়াম এক্সটেন্ডেড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (মিডস)। ৩৬০ ডিগ্রি প্রতিরোধ গড়ে তোলে এই হাতিয়ার। আমেরিকা, জার্মানি এবং ইতালি এই তিন দেশের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি করা হয়েছে এই অস্ত্র।
বারাক-৮। ধেয়ে আসা শত্রুপক্ষ থেকে ৩৬০ ডিগ্রি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম এটিও। যে কোনও সময়, যে কোনও আবহাওয়ায় এটি কাজ করতে সক্ষম। ভারতের নৌসেনার কাছে রয়েছে এই হাতিয়ার।
আয়রন ডোম। এই মুহূর্তে সবচেয়ে চর্চার বিষয় এই হাতিয়ারই। ইজরায়েলের এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি এবং রাফাল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমের যৌথ উদ্যোগে এটি তৈরি। ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব থেকে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে সমর্থ। শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করে তা ধ্বংস করে দিতে এটি ৯০ শতাংশ কার্যকর।