আশা না মেটায় আমেরিকার ওপর খুব চটেছে পাকিস্তান। এতটাই যে, আমেরিকাকে ছেড়ে এ বার চিন, রাশিয়ার ‘দোসর’ হওয়ার হুমকি দিতে হচ্ছে ইসলামাবাদকে। বলতে হচ্ছে, ‘বিশ্বে আমেরিকা আর তেমন কোনও শক্তিই নয়। ক্ষয়িষ্ণু শক্তি।’
আড়ালে-আবডালে নয়, কাশ্মীর ইস্যুতে ওয়াশিংটন উত্তরোত্তর পাকিস্তানকে ছেড়ে ভারতের দিকে ঝুঁকে পড়ায় দৃশ্যতই অসন্তুষ্ট পাকিস্তানের দূত সে কথা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে। আঙুর ফল টক?
কাশ্মীর ইস্যুতে মার্কিন সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দুই দূত মুশাহিদ হুসেন সইদ ও শাজরা মনসব এখন আমেরিকায়। কিন্তু তাঁদের লাগাতার চেষ্টার পরেও কাশ্মীর ইস্যুতে হোয়াইট হাউসের মনোভাবে তেমন কোনও হেলদোল নেই দেখে মার্কিন চিন্তাবিদদের সংগঠন ‘আটলান্টিক কাউন্সিলে’র এক সভায় বৃহস্পতিবার সইদ বলেছেন, ‘‘বিশ্বে আমেরিকা আর তেমন কোনও শক্তি নয়। উত্তরোত্তর আমেরিকার শক্তি ক্ষয় হচ্ছে বিশ্বে। আমেরিকার কথা ভুলে গেলেও চলবে।’’ এই টুকু বলেই থেমে যাননি ওই পাক দূত। প্রকাশ্যে হুমকিও দিয়ে বসেছেন আমেরিকাকে। বলেছেন, ‘‘কাশ্মীর ইস্যু ও ভারত সম্পর্কে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান যদি আমেরিকা সমর্থন না করে তা হলে আমেরিকার পাশ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ইসলামাবাদ চিন ও রাশিয়ার পক্ষে চলে যাবে।’’
ভারতের ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’র পরেও মার্কিন মনোভাবে কোনও রদবদল না ঘটায় এ দিন মার্কিন চিন্তাবিদদের সভায় বার বারই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় পাক দূত সইদকে। ক্ষোভ প্রকাশ করতে করতেই সইদ বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, চিন ততই আমাদের বন্ধু হয়ে উঠছে। দক্ষিণ এশিয়ায় চিন এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। বৃহত্তর দক্ষিণ এশিয়াতেও এখন বেজিঙের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হালে রাশিয়ার সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক গভীর হয়ে উঠছে। সম্প্রতি আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার যৌথ সেনা মহড়াও হয়েছে। পুতিন সরকার এই প্রথম অস্ত্র বেচার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি করতে রাজি হয়েছেন। ’’
ওই ক্ষোভ আর হুমকির পাশাপাশি পাক দূত সইদ এ দিন আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে বিশেষ মার্কিন দূত রিচার্ড ওলসনের হাতে কুলে দিয়েছেন ভারতের বিরুদ্ধে একটি ‘ডসিয়ার’।
আরও পড়ুন- গোপন বৈঠকে তীব্র উষ্মা নওয়াজ শরিফের, পাক সেনাকে বেনজির হুঁশিয়ারি