বন্দুকবাজের হানা, আমেরিকায় হত ৩

হামলার খবর পেয়ে শপিং কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন ভিতরে থাকা ক্রেতা আর কর্মীদের উদ্বিগ্ন পরিজনেরাও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ডেনভার শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০২
Share:

ত্রস্ত: থর্নটনের এক ওয়ালমার্টের ভিতরে গুলি চলার পরে সুপারমার্কেটের বাইরে এক খুদে। বুধবার রাতে। ছবি: এপি।

লাস ভেগাসের স্মৃতি এখনও টাটকা। মার্কিন মুলুকে ফের বন্দুকবাজের হামলায় প্রাণ গেল তিন জনের। গত কাল কলোরাডোর ডেনভার থেকে কিছুটা দূরে থর্নটন শহরের ঘটনা।

Advertisement

সন্ধে তখন ছ’টা বেজে দশ মিনিট। থর্নটন টাউন সেন্টার শপিং কমপ্লেক্সের ওয়ালমার্টের দোকানে তখন বেশ ভিড়। হঠাৎই দোকানের দক্ষিণ দিকের দরজা দিয়ে বন্দুক হাতে ঢুকে পড়ে এক ব্যক্তি। পরনে মেরুন শার্ট, কালো জ্যাকেট আর নীল রঙা জিনস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সাদা চামড়া ওই মাঝ বয়সি ব্যক্তি কোনও কথা না বলেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে ওয়ালমার্ট জুড়ে শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি আর আতঙ্ক। এক দিকে দোকানের কর্মীরা ভয়ে চেঁচামেচি জুড়ে দেন। অন্য দিকে ক্রেতারা কমপ্লেক্সের অন্য দোকানগুলিতে ঢুকে নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কেউ কেউ ঢুকে পড়েন পার্কিং জোনে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই খবর যায় পুলিশে। আসে মেডিক্যাল টিমও। কিন্তু পুলিশ পৌঁছনোর আগেই একটি লাল রঙের ছোট গাড়ি করে পালিয়ে যায় আততায়ী। হামলার খবর পেয়ে শপিং কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন ভিতরে থাকা ক্রেতা আর কর্মীদের উদ্বিগ্ন পরিজনেরাও।

হামলার পর পরই অবশ্য নিজেদের টুইটার অ্যাকাউন্টে এলাকাবাসীদের সতর্ক করে দিয়েছিল পুলিশ। বলা হয়, ওয়ালমার্টের ধারে কাছে কেউ যেন না ঘেঁষেন। ঘণ্টা খানেক পরে পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। থর্নটন পুলিশের মুখপাত্র ভিক্টর আভিলা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আততায়ীকে ধরতে এখন তল্লাশি চলছে গোটা থর্নটনে। সতর্ক করা হয়েছে, আশপাশের স্টেটগুলিকেও। কেন ওই ব্যক্তি এ ভাবে হামলা চালালো, তা নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে পুলিশ দফতর। যে হেতু হামলার আগে বা পরে সে একটি শব্দও খরচ করেনি, তাই কোন বিদ্বেষ থেকে সে এমনটা করল, তা স্পষ্ট নয় একেবারেই। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া আততায়ীর একটি ছবিই আপাতত সম্বল তাদের। ওই ছবি ছাড়া বন্দুকবাজের নাম-ঠিকানা এখনও পর্যন্ত জানতে পারেনি পুলিশ। সে মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তা-ও জানা যায়নি। তবে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে প্রত্যক্ষদর্শীদের। এই হামলায় জঙ্গি যোগ রয়েছে কি না, তা-ও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ।

Advertisement

জানা যায়নি নিহতদের পরিচয়ও। আভিলা শুধু জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে দু’জন পুরুষ। ওয়ালমার্টেই মারা যান তাঁরা। আহত এক মহিলাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মারা যান তিনি। নিহতেরা একে অপরের পরিচিত কি না তা-ও স্পষ্ট নয়।

হামলার সময় ওয়ালমার্টে উপস্থিত ছিলেন হেইন রাকার এবং আরন স্টিফেন্স। কেনাকাটা সারার পরে বিল মেটিচ্ছিলেন দু’জনেই। হামলাকারীকে চোখে দেখেননি তাঁরা। তবে গোটা ঘটনার আতঙ্কে ওখনও কাঁটা হয়ে রয়েছেন ওই দুই ক্রেতা। রাকার শুধু বললেন, ‘‘আমার সামনে একটা দরজা ছিল। সেটা দেখেই দৌ়ড়ে পালাই। গুলিবিদ্ধ হওয়ার একটুও ইচ্ছে ছিল না।’’ আরনও একই কাজ করেছেন। পালিয়ে লুকিয়ে ছিলেন পার্কিং লটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, ২০ থেকে ৩০ বার গুলির শব্দ পেয়েছেন তাঁরা। তবে সেই সংখ্যাটা নিয়েও ধন্দে রয়েছে থর্নটন পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement