মেরিকার আরকানস প্রদেশের বাসিন্দা তন্বী মারুপল্লিনামে ওই কিশোরী গত তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ। প্রতীকী ছবি।
চাকরি যাওয়ায় মাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল। পরে তিনি আমেরিকা ফিরেছেন। এ বার বাবার চাকরি চলে কী হবে! এই আশঙ্কাতেই ঘর ছেড়েছেন ১৪ বছরের এক কিশোরী, অনুমান পুলিশের। আমেরিকার আরকানস প্রদেশের বাসিন্দা তন্বী মারুপল্লিনামে ওই কিশোরী গত তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ।
আরকানসর কনওয়েতে থাকে তন্বীর পরিবার। ১৭ জানুয়ারি শেষ বার তাঁকে স্কুলের বাস ধরার জন্য বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা গিয়েছে বলে কনওয়ে পুলিশ (সিপিডি) সূত্রে খবর।
পুলিশের পাশাপাশি তন্বীর বাবা-মায়েরও ধারণা, দেশছাড়ার আশঙ্কাতেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে তাঁদের মেয়ে। বাবা-মা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরে তাঁরা আমেরিকায় রয়েছেন। আশা করছেন, এ দেশের নাগরিকত্বও হয়তো পাবেন তাঁরা। তবে অভিবাসন নীতির জেরেই আজ সঙ্কটে তাঁরা।
তন্বীর বাবা পবন রায় মারুপল্লি একটি প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। ওই সংস্থায় এক ঝাঁক কর্মীর ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তবে তিনি চাকরি হারানোর ভয় পাচ্ছেন না বলে জানান পবন। নেই দেশছাড়ার উদ্বেগও।
একটি আমেরিকান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত বছরের নভেম্বরমাস থেকে প্রায় ২ লক্ষ আইটি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ছাঁটাইয়ের কোপ পড়েছে গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুকের মতো নামী সংস্থার কর্মীদের উপরেও। আইটি সংস্থাগুলির কর্মীদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশই ভারতীয়। তাঁদের অধিকাংশেরই রয়েছে এইচ-ওয়ানবি এবং এলওয়ান ভিসা রয়েছে।
একটি সংস্থা জানাচ্ছে, শুধু জানুয়ারিতেই ৯১ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। আগামী কয়েক মাসে সংখ্যাটা অনেকটাই বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা ওই সংস্থার। এর প্রভাব পড়তে পারে কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের উপরে। ফলে অনেককেই দ্রুত আমেোরিকা ছাড়তে হতে পারে।
ইতিমধ্যেই চাকরি গিয়েছে তন্বীর মা শ্রীদেবী ইদারারও। তার জেরে শ্রীদেবীকে একাই দেশে ফিরতে হয়েছিল। স্বামীর পরিচয় দিয়ে ফের আমেরিকায় যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন জানিয়ে ফিরতেপেরেছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে বাবার কাছে তন্বী জানতে চেয়েছিল, চাকরি চলে গেলে কী ভাবে তারা এ দেশে থাকবেন? যদিও পবন মেয়েকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছিলেন, এ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই।
পবন জানান, তিনি মেয়েকে বলেছিলেন, তেমন পরিস্থিতি হলে মায়ের সঙ্গে তন্বীকে ভারতে ফিরতে হবে। তিনি ফের কোথাও চাকরি পেলে স্ত্রী-মেয়েকে আবার আমেরিকায় নিয়ে আসবেন। পবন জানান, সেইসময়ে তন্বী বলেছিল, “ভারতে কেন যাব? আমরা এখানেই থাকব।” তবে সেই আশঙ্কায় যে তাঁদের মেয়ে বাড়ি ছেড়েই পালিয়ে যাবে, ভাবতে পারেননি পবন।
কনওয়ে পুলিশের মুখপাত্র ল্যাসি কানিপে জানিয়েছেন, তন্বীকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে বদ্ধপরিকর তাঁরা। তন্বীর খোঁজে সক্রিয় সিপিডি। ইতিমধ্যেই পুলিশ ও তন্বীর পরিবারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ওই কিশোরীর খোঁজ দিতে পারলে মিলবে পুরস্কার। ১৪ বছরের ওই কিশোরীর নিখোঁজের ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে আমেরিকার অভিবাসন নীতি।