ভূমিকম্পের জেরে মীরপুরে এ ভাবেই খানখান হয়ে গিয়েছে রাস্তা। ছবি: রয়টার্স।
প্রবল ভূমিকম্পে তছনছ পাক অধিকৃত কাশ্মীর। এখনও পর্যন্ত মোট ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে, যার মধ্যে রয়েছে ৩ শিশুও। জখমের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে প্রচুর।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিটে ৫.৮ তীব্রতায় কেঁপে ওঠে পাক অধিকৃত কাশ্মীর, সংলগ্ন এলাকা এবং উত্তর পাকিস্তানের একাংশ। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ঝিলমের ২২.৩ কিলোমিটার উত্তরে, ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরই কম্পনের উৎসস্থল ছিল।
পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮-১০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল কম্পন। আর তাতেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পাক অধিকৃত কাশ্মীর। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ে সেখানে। আশপাশের এলাকাতেও এর প্রভাব পড়ে। ইসলামাবাদ, পেশোয়ার, রাওয়ালপিণ্ডি, লাহৌর, সিয়ালকোট, গুজরাত, মুলতান, সোয়াত, সাহিওয়াল, চিত্রাল, মানশেরা-সহ আরও অনেক জায়গায় কম্পন অনুভূত হয়।
রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন আতঙ্কিত মানুষ। ছবি: এপি।
আরও পড়ুন: নাম বদলাল জইশ-ই-মহম্মদ, হামলা করতে পারে ভারতে, জানালেন গোয়েন্দারা
এই মুহূর্তে মার্কিন সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। খবর পেয়েই মৃতদের পরিবার পরিজনদের সমবেদনা জানান তিনি। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। উদ্ধারকাজে যাতে কোনও খামতি না থাকে, নিজে তার তদারকি করছেন সে দেশের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনার চৌধরি মহম্মদ তায়াব জানান, ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মীরপুর, জাঠলান। সেখানেই ৩০০ জন জখম হন, যার মধ্যে ২ জনকে মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে আনা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বাকি ৭ জনের। জাঠলান গ্রামে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৩০০ জনের মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানান তিনি। স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই ভূমিকম্পের রেশ পৌঁছেছে ভারতেও। কাশ্মীর-সহ উত্তর ভারতের একাংশে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন, ‘কোথায় এমন সাংবাদিক পান?’, ইমরানকে বললেন ট্রাম্প
ইন্ডিয়ান এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কিছু এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ। গত কয়েক বছরে একাধিক বার ভূমিকম্প হয়েছে সেখানে। ২০১৫-র অক্টোবরে ৭.৫ তীব্রতায় ভূমিকম্প হলে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে প্রায় ৪০০ জন প্রাণ হারান। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটি হয়েছিল ২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর। পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, সে বার ৭.৬ তীব্রতায় কম্পনের জেরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৭৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। রছাড়া হয়েছিলেন ৩৫ লক্ষ মানুষ।