অশান্ত বাংলাদেশ। ছবি: রয়টর্স।
আবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল বাংলাদেশে। পড়ুয়াদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। রবিবার রাত থেকেই রাজধানীতে এই সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, রবিবারের ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। সবাকেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রথম আলো জানিয়েছে, রবিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ ঢাকার সচিবালয়ের সামনে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত। পড়ুয়া এবং আনসার সদস্যেরা একে অপরের দিকে তেড়ে যান। ইটবৃষ্টি শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হস্টেল থেকে বেরিয়ে আসেন পড়ুয়ারা। তার পর তাঁরা সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হন। বেশ কিছু ক্ষণ দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে পুলিশ। পরে সেনাবাহিনীও নামানো হয়। স্থানীয় সময় রাত ১০টা নাগাদ আনসারের সদস্যেরা পিছু হটতে শুরু করলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে সংঘর্ষে দু’পক্ষের অনেকেই আহত হন। কারও মাথা ফেটে যায়, তো কারও হাত-পায়ে চোট লাগে।
উল্লেখ্য, চাকরি সরকারি করার দাবিতে গত দু’দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে আনসার। তাদের বক্তব্য, আশ্বাস দেওয়ার পরেও দাবি মানা হয়নি। রবিবার দুপুর থেকে আনসার সদস্যেরা সচিবালয়ের বিভিন্ন গেটের বাইরে বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু করেন। তাঁদের অবস্থানের ফলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সচিবালয়ের কাজ থমকে যায়। সচিবালয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে পারেন না অনেকেই। যাঁরা ভিতরে ছিলেন তাঁরা আটকে পড়েন। রাত যত বাড়তে থাকে, উত্তেজনা ততই ছড়াতে থাকে। একটা সময় খবর ছড়ায়, সচিবালয়ের মধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাদিম ইসলাম আটকে রয়েছেন। তিনি ছাড়াও আরও কয়েক জন সমন্বয়কও সচিবালয়ে আটকে পড়েন। সেই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই পড়ুয়ারা দলে দলে বেরিয়ে আসেন। জড়ো হন সচিবালয়ের সামনে। তার পরই আনসার সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। রবিবারের পর সোমবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন জায়গায় থমথমে পরিস্থিতি।
কোটা সংস্কারে দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন একটা সময় সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামেন বহু মানুষ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন হাসিনা। দেশ ছাড়েন তিনি। হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিলেন। সেই থেকে ভারতেই রয়েছেন। তাঁর দেশ ছাড়ার পর উত্তেজনা আরও বাড়ে। অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সদস্যদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। এমনকি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালানোও হয়। তবে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ধীরে ধীরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে এর মধ্যেই রবিবার ঢাকায় নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে এল।