বিস্ফোরণে আহত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স।
কানফাটানো শব্দ। তার পরই ধুলো, ধোঁয়া এবং মাংসপিণ্ডে ভরে উঠল চারপাশ। কারও হাত উড়ে গিয়েছে তো কারও মাথার খুলি! কিছু দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে! আর্ত চিৎকারের পরিসরটুকুও ছিল না। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে শিউরে উঠেছিলেন আফগানিস্তানে আমেরিকার বিশেষ অভিবাসন দফতরের কর্মী।
বিমানবন্দরের অ্যাবি গেটের সামনে আফগানদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। বলেন, “স্থানীয় সময় বিকেল তখন পাঁচটা। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎই জোরালো বিস্ফোরণ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেহ। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন অনেকে।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আমেরিকার বিশেষ অভিবাসন দফতরের কর্মীর কথায়, “সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল পায়ের নীচ থেকে কে যেন মাটি সরিয়ে নিল। মনে হচ্ছিল, কানের পর্দা ফেটে রক্ত বেরিয়ে এসেছে।” চার পাশ তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই কর্মী, বিস্ফোরণের অভিঘাতে কয়েক ফুট দূরে ছিটকে পড়েছিলেন। কিন্তু বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন। যে সৌভাগ্য হয়নি তাঁর কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর। যাঁদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে বিমানবন্দরে ঢোকার অপেক্ষা করছিলেন, পর মুহূর্তে সেই মানুষগুলোকে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে দেখে জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ওই কর্মী।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তাঁর কথায়, “বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই দেহাংশগুলো শূন্যে ভাসছিল। মনে হচ্ছিল কোনও ঘূর্ণিঝড় প্লাস্টিক ব্যাগ, খড়কুটোকে শূন্যে ভাসিয়ে দিয়েছে। এক মুহূর্তে মনে হয়েছিল জীবনের শেষ দিন দেখে ফেলেছি।” তবে বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন।
আমেরিকার গোয়েন্দারা আগেই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন যে কোনও মুহূর্তে বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে। সেই সতর্কবার্তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে পর পর দু’টি বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে, আহত ১৫০ জন।