জ্বলছে আরামকো-র তেলের খনি। সৌদি আরবের আবকাইকে। ছবি- রয়টার্স
ড্রোন আছড়ে পড়ায় দাউদাউ করে জ্বলছে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল উৎপাদক সংস্থা ‘আরামকো’-র দু’টি তেলের খনি। শনিবার সকালের ড্রোন-হানায়। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে এই খবর জানানো হয়েছে।
সৌদি আরবের পূর্ব প্রান্তে আরামকো-র দু’টি তেলের খনিতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। দাউদাউ করে জ্বলছে খনির দু’টি এলাকা। আবকাইক ও খুরায়েস। আরামকো-র দাবি, আবকাইক বিশ্বের ‘বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল স্থায়ীকরণ প্ল্যান্ট’। এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠনই ওই ড্রোন হানায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার না করেনি। যদিও রিয়াধের কর্তাদের সন্দেহ, এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে ইরান। তেল বেচা অর্থে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগে ইরানের উপর জারি হওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও রিয়াধের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়ে ওঠার প্রেক্ষিতে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
রিয়াধের সরকারি সংবাদমাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, তেল খনির দু’টি প্ল্যান্ট- আবকাইক ও খুরায়েসে শনিবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছেন আরামকো সংস্থার নিরাপত্তা কর্মীরা। আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে পরে সৌদি সংবাদ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
কোথা থেকে সেই ড্রোন উড়ে এসেছে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু না জানানো হলেও রিয়াধ জানিয়েছে, ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- বোরখা ছেড়ে ‘বিদ্রোহী’ সৌদি তরুণী
আরও পড়ুন- বিদেশ সফরে একা যেতে পারবেন সৌদি মেয়েরা
গত মাসে আক্রান্ত হয়েছিল সৌদির একটি প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্র। প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনের সঙ্গে এমিরাতি সীমান্তের কাছে সৌদি আরবের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্রে ড্রোন হানা চালিয়েছিল ‘হুথি’ উপজাতি গোষ্ঠীর বিদ্রোহীরা। তাতে অবশ্য কোনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল সামান্যই। ইয়েমেনে হুথিদের দখল করা জায়গাগুলি মুক্ত করতে কয়েক মাস ধরেই বিমান হানা চালাচ্ছে রিয়াধ। তার জেরেই গত কয়েক মাস ধরে ইয়েমেনের হুথি জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে উঠেছে সৌদির তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্ষেত্রগুলি। সীমান্তের এ-পার থেকে হুথি জঙ্গিরা লাগাতার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে যাচ্ছে সৌদির তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্ষেত্রগুলিকে লক্ষ্য করে।
তবে শনিবারের ড্রোন হানাদারির পিছনে হুথিরাই কি না, সে ব্যাপারে রিয়াধও নিশ্চিত হতে পারেনি। হুথিদের তরফেও ওই হানাদারিতে জড়িত থাকার দাবি জানানো হয়নি।
ধাহ্রানে আরামকো-র সদর দফতর থেকে ৬০ কিলোমিটার (৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে আবাকাইক তেল ক্ষেত্রটি। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবকাইক তেলক্ষেত্রেই ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেছিল আল-কায়েদা জঙ্গিরা। আত্মঘাতী জঙ্গি হানায় ওই সময় আবকাইকের দুই নিরাপত্তা কর্মী প্রাণ হারিয়েছিলেন। আল-কায়েদার দুই আত্মঘাতী জঙ্গিরও মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ২০১৪ সালে সৌদির একটি আদালত এক জনেক মৃত্যুদণ্ড দেয়। অন্য দুই অভিযুক্ত সৌদি নাগরিককে যথাক্রমে ৩৩ এবং ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরামকো-র সবচেয়ে বড় তেল ক্ষেত্রগুলির মধ্যে অন্যতম খুরায়েস। ধাহ্রান থেকে খুরায়েসের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার।