ছবি: সংগৃহীত।
দরজা দিয়ে পুলিশের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন এক যুবক। দু’হাত উপরে তোলা। পুলিশের নির্দেশেই একটু আগে হ্যান্ডগান নামিয়ে রেখেছেন। সে অবস্থাতেই এগিয়ে আসছিলেন। তা দেখে তাঁকে থামতে বলেন এক পুলিশ অফিসার। কথা শোনেননি যুবকটি। ফের একই নির্দেশ দেন অফিসার। তা-ও থামেননি যুবকটি। তিন সেকেন্ড পর শোনা গেল পর পর পাঁচটি গুলির শব্দ। বুকে পাঁচ-পাঁচটি বুলেট নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন যুবক।
গোটা ঘটনার ফুটেজ ধরা পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার এক পুলিশ অফিসারের বডি-ক্যামেরা থেকে। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সান বার্নার্দিনোতে নিজের বাড়ির সামনে এ ভাবেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বছর সাতাশের রিচার্ড জন স্যাঞ্চেজ। তার পর থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফেটে পড়েছে। তবে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেননি সান বার্নার্দিনো পুলিশ কর্তৃপক্ষ। বরং ঘটনার এক বছর পরে তার ফুটেজ প্রকাশ করেছেন। খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন, কোন পরিস্থিতিতে ওই অফিসার গুলি চালিয়েছিলেন।
শুক্রবার সান বার্নার্দিনোর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধান এরিক ম্যাকব্রাইড জানিয়েছেন, সে দিন সন্ধ্যায় পুলিশকে ফোন করেন স্যাঞ্চেজের শ্যালিকা। আতঙ্কিত গলায় ওই মহিলা জানান, তাঁদের বাড়ির কিচেনে হ্যান্ডগান নিয়ে পরিবারের লোকজনকে শাসাচ্ছেন স্যাঞ্চেজ। মত্ত অবস্থায় অসংলগ্ন কথাবার্তাও বলছেন।ভয় পেয়ে বাচ্চাদের নিয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন তিনি।
দেখুন সেই ঘটনার ভিডিয়ো
খবর পেয়ে ওই বাড়ির সামনে গিয়ে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। এর পরের ঘটনা ধরা পড়েছে পুলিশ অফিসারের বডি ক্যামেরায়।
স্যাঞ্চেজের অকালমৃত্যুতে শোকাহত হলেও গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশংসাই শোনা গিয়েছে স্যাঞ্চেজের পরিবারের সদস্যদের মুখে। স্থানীয় মিডিয়ায় ওই ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করে গোটা ঘটনাটা প্রকাশ্যে আনার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষের তারিফও করেছে স্যাঞ্চেজের পরিবার। একটি বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘রিচার্ডের মৃত্যুতে যে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে তা কোনও ভাবেই পূরণ করা যাবে না। তবে সান বার্নার্দিনো পুলিশ বিভাগ যে এই মর্মান্তিক ঘটনার সত্য উদ্ঘাটনে তদন্ত করেছেন, যদি তাতে তাদের এক সহকর্মীর ভুলই স্বীকার করা হয়, এবং যে তত্পরতায় এর দায়স্বীকার করেছেন, তাতে আমরা সম্মানিত।’
আরও পড়ুন: বাগাদাদিকে ধরতে মার্কিন অভিযান, আত্মঘাতী বোমায় নিজেকে ওড়াল আইএস শীর্ষ নেতা!
আরও পড়ুন: হাতে বিপুল অর্থ, তবু খেটেখুটে সংসার টানতে হয় তরুণীকে, কেন জানেন?
সে দিনের ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ করলেও ওই অফিসারের কী শাস্তি হয়েছে, সে বিষয়ে মুখ খোলেনি সান বার্নার্দিনো পুলিশ কর্তৃপক্ষ। যদিও পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, ওই অফিসারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।