স্যামুয়েল লিটল। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
গত চার দশক ধরে আমেরিকায় যত মহিলাকে সে খুন করেছে একের পর এক, গারদের গরাদের আড়ালে ছোট একটা কুঠুরিতে বসে তাঁদের ছবি আঁকে স্যামুয়েল ‘আঙ্কল’। স্যামুয়েল লিটল। বয়স ৭৯ বলে আর অনেক দিন ধরে আছে বলে জেলের কর্মীরা তাকে ডাকেন ‘আঙ্কল’। স্যামুয়েল ছবি এঁকে চলে কখনও পেন্সিলে। কখনও বা রং, তুলিতে। সবক’টি মহিলার মুখ তার এখনও নখদর্পণে রয়েছে। তাই আঁকতে আঁকতে কোথাও কোনও মহিলার মুখের কোনও রেখা বাদ পড়ে গেলে, স্যামুয়েল তা জুড়ে দেয় কিছু ক্ষণ পর।
সব মনে রয়েছে স্যামুয়েলের। যাদের সে খুন করেছিল, সেই সব মহিলার চোখের রং। কী ভাবে তাঁরা চুল বাঁধতেন, তা-ও ভুলে যায়নি সে। কাকে কোথায় খুন করেছিল, গড়গড় করে বলে দিতে পারে স্যামুয়েল। তাই তার আঁকা একটি ছবির ক্যাপশন দিয়েছে স্যামুয়েল, ‘‘টল গার্ল বাই হাইওয়ে সাইন, সিনসিনাটি।’’ যার মানে, সিনসিনাটির এক হাইওয়েতে ওই লম্বা মহিলাটিকে খুন করেছিল স্যামুয়েল। সালটা লিখতে গিয়ে অবশ্য হিসাব গুলিয়ে ফেলেছে স্যামুয়েল। লিখেছে, ‘‘১৯৮৪ বা ’৭৪’’। বাড়ি ছিল ওহায়োতে। সেখানেই খুন করেছে কম করে পাঁচটি। ১৯৭০ থেকে ২০০৫। টানা ৩৫ বছর ধরে একের পর এক খুন করে গিয়েছে স্যামুয়েল। শুক্রবারই ৭৯-তে পা দিয়েছে স্যামুয়েল।
ক্যালিফোর্নিয়ার জেলে পর পর তিনটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ কাটাতে গিয়ে শরীরটা কিছুটা ভেঙেছে স্যামুয়েলের। গাল বসে গিয়েছে। ঝুলে পড়েছে চোখ। শরীরটাও কিছুটা ঝুঁকে গিয়েছে সামনের দিকে। ৬০ জনকে খুন করেছে স্যামুয়েল। আদালতে সবক’টি অপরাধ কবুলও করেছে। হ্যামিল্টন কাউন্টির প্রসিকিউটর জোসেফ টি ডেটার্স বলেছেন, ‘‘স্যামুয়েল আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার। ও যত খুন করেছে, তত বার আর কেউ খুন করেনি মার্কিন মুলুকে।’’
আরও পড়ুন- মেয়েকেও ধর্ষণ, আলিগড়ে ধৃত জেল খাটা দাগি
আরও পড়ুন- টাইম্স স্কোয়ারে হামলার ছক, ধৃত বাংলাদেশি যুবক
স্যামুয়েলকে টক্কর দেওয়ার মতো পুলিশের রেকর্ডে আর একটি নামই ছিল, নয়ের দশকের শেষে। গ্যারি রিজওয়ে। কিন্তু পরে গ্যারি পিছিয়ে পড়ে স্যামুয়েলের কাছে। মার্কিন পুলিশের রেকর্ড বলছে, গ্যারি খুন করেছে ৪৯টি। স্যামুয়েল তার চেয়ে ১১টি বেশি। পুলিশের ধারণা, আরও খুন করেছে স্যামুয়েল। সেই সংখ্যাটা ৯৩ হতে পারে। যদিও সেই সব খুনের কথা এখনও জেরায় কবুল করেনি স্যামুয়েল।
স্যামুয়েল ধরা পড়েছিল কেনটাকিতে, আশ্রয়হীনদের শিবির থেকে। সেটা ২০১২ সাল। এফবিআই জানিয়েছে, গ্রেফতারের পর তাকে তুলে দেওয়া হয় ক্যালিফোর্নিয়ার পুলিশের হাতে। সেখানে মাদক সেবনের অভিযোগ ছিল স্যামুয়েলের বিরুদ্ধে। টেক্সাসেও কয়েকটি খুন করে স্যামুয়েল।