‘হার্ট অব এশিয়া-ইস্তানবুল প্রসেস’-এর তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এস জয়শঙ্কর। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আফগানিস্তান-হিংসা নিয়ে পরোক্ষে ইসলামাবাদকে দুষলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কাবুলে বাইরের জঙ্গিরা এসে হিংসা বাড়াচ্ছে। তা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।’’
চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া-সহ পনেরোটি দেশের আফগানিস্তানের সমাধান সূত্র খোঁজার জন্য তৈরি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী, ‘হার্ট অব এশিয়া-ইস্তানবুল প্রসেস’-এর তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আজ ভারতের অবস্থান এ ভাবেই তুলে ধরলেন জয়শঙ্কর। এই গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হল আজ। সেখানে তাঁর বক্তৃতায় কাবুলে অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতির দাবি তুলে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের যা পরিস্থিতি তাতে তাদের প্রয়োজন দ্বিস্তরীয় শান্তি। একটি হল আফগানিস্তানের ভিতরে, অন্যটি আফগানিস্তানের চারপাশে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আফগানিস্তানের চারপাশে যে সব দেশ রয়েছে তাদের স্বার্থকে এক তারে বাঁধা খুবই জরুরি।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জয়শঙ্করের বক্তৃতার সময়ে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশিও।
আজ বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে সামগ্রিক এবং স্থায়ী সংঘর্ষবিরতিতে পৌঁছতে রাজনৈতিক সমাধানের জন্য যে কোনও পদক্ষেপকে ভারত সমর্থন করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের আওতার ভিতরে যে কোনও ধরনের আঞ্চলিক উদ্যোগেও ভারতের সমর্থন রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাসঙ্গিক সমস্ত সমস্ত প্রস্তাবগুলিকে এ ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে টেঁকসই সমাধান পাওয়া সম্ভব।’’
তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে বিদেশমন্ত্রী আজ জানিয়েছেন যে, ২০১৯ সালে আফগানিস্তানে ৪৫ শতাংশ নাগরিক হতাহত হন। ২০২০ সালেও এই পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। আফগানিস্তানের তালিবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী, আইএসআই এবং রাষ্ট্রীয় মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির সংযোগের কথা এবং সেই কারণে অশান্তি না কমার অভিযোগ এর আগেও বিভিন্ন ভাবে তুলেছে ভারত। আজ পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর সামনে সে দেশের নাম করেননি জয়শঙ্কর ঠিকই। কিন্তু ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানের মাটিতে ধারাবাহিক ভাবে বিদেশি সন্ত্রাসবাদীদের উপস্থিতি বিশেষ ভাবে আশঙ্কাজনক। হার্ট অব এশিয়ার সদস্য এবং সমর্থক রাষ্ট্রগুলিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবিলম্বে হিংসা কমানোর কাজে লাগতে হবে। যাতে স্থায়ী সংঘর্ষবিরতিতে পৌঁছনো সম্ভব হয়।’’