S.Jaishankar Meets Russia's FM Sergey Lavrov

জয়শঙ্কর-লাভরভ বৈঠকে পারস্পরিক সহযোগিতায় জোর

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আলোচনায় উঠে এল গতকাল ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার প্রসঙ্গ। ভারতকে সবিস্তার ড্রোন হামলার প্রত্যাঘাতের বিষয়টিও জানিয়েছে মস্কো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৩ ০৮:৪৬
Share:

রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সওয়া ঘণ্টার বৈঠক করলেন গোয়ায়। ছবি: সংগৃহীত।

গোয়ায় শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর পার্শ্ববৈঠকে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সওয়া ঘণ্টার বৈঠক করলেন। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আলোচনায় উঠে এল গতকাল ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার প্রসঙ্গ। ভারতকে সবিস্তার ড্রোন হামলার প্রত্যাঘাতের বিষয়টিও জানিয়েছে মস্কো। সূত্রের খবর, ক্রেমলিনে হামলার নিন্দা করেছেন জয়শঙ্কর। ইউক্রেন তাদের বিরুদ্ধে হামলা করার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেও রাশিয়া তা বিশ্বাস করেনি। আজ জয়শঙ্কর-লাভরভ আলোচনায় রাশিয়ার বক্তব্য খণ্ডন করতে চায়নি ভারত। লাভরভ ভারতীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, মস্কোর তরফে দৃষ্টান্তমূলক জবাব দেওয়াচলতে থাকবে।

Advertisement

বৈঠকের পরে সরকারি ভাবে মুখ খোলা হয়নি এই নিয়ে। জয়শঙ্করের টুইট, “দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়গুলি নিয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে সামগ্রিক পর্যালোচনা হয়েছে। এসসিও গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রের সভাপতিত্বকরছে ভারত। এ ব্যাপারে রাশিয়ার সমর্থনে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করেছি। এ ছাড়া জি২০ এবং ব্রিকস নিয়েও আলোচনা হয়েছে।”

পরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে প্রচ্ছন্ন ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, ইউক্রনের সঙ্গে যুদ্ধে এই মুহুর্তে নয়াদিল্লিকে পাশে পাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলা হয়েছে, ‘সের্গেই লাভরভের সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠকে আসন্ন বৈঠক-সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়গুলি নিয়ে আস্থাপূর্ণ মতবিনিময় হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে সমসাময়িক বিষয়গুলিও আলোচনায় উঠেছে। আমাদের দেশের মধ্যে বিশেষ কৌশলগত সম্পর্কের প্রধান দিকগুলিতে যে ভাবে সহযোগিতা সর্বদা চালু রয়েছে তার প্রশংসা করেছেন মন্ত্রীরা।’ এসসিও শুধু নয় রাষ্ট্রপুঞ্জ, জি২০-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সহযোগিতা আরও পাকাপোক্ত করা নিয়ে কথা বলেছেন দুই মন্ত্রী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেবলা হয়েছে, দু’পক্ষই আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষপাতী।

Advertisement

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আলোচনায় উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের দিকটিও। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত অগ্রাহ্য করেই মস্কো থেকে বিপুল পরিমাণ অশোধিত তেল সস্তায় আমদানি করেছে ভারত। কিন্তু একই সঙ্গে নয়াদিল্লি মস্কোর কাছে দাবি জানাচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যে ভারসাম্যের অভাব রয়েছে (অর্থাৎ রাশিয়া থেকে ভারতের আমদানি অনেক বেশি রফতানির তুলনায়), তা কমাতে হবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং অস্ত্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলার সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে লেনদেন করা যে সমস্যার তা টের পাচ্ছে দুই দেশই। সূত্রের খবর, এক বছরে রাশিয়ার থেকে আনা সরঞ্জামের দাম হিসাবে ২০০ কোটি ডলার আটকে রয়েছে। রাশিয়াকে বরাত দেওয়া রয়েছে দু’টি এস৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি-সহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ। যার মূল্য ১০০০ কোটি ডলার। এই যথেষ্ট বড় পরিমাণ অঙ্ক ডলারে না দিয়ে কী ভাবে মেটানো হবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাশিয়া ভারতীয় টাকায় দাম নিতে চায় না। কারণ তার বিনিময় মূল্যের ওঠাপড়া প্রবল। আবার ভারতও রুবল-এ (রুশ অর্থ) বাণিজ্য করতে ইচ্ছুক নয় কিছু সঙ্গত কারণে। ভারত এই প্রস্তাবও মস্কোকে দিয়েছে যে, অস্ত্রের বিনিময়ে পাওয়া টাকা এখানকার বাজারেই বিনিয়োগ করতে। কিন্তু সে ব্যাপারেও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement