ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েল, আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে চতুর্দেশীয় বৈঠকে বসলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই চার দেশের এমন বৈঠক এই প্রথম। এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়ায় বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি সমুদ্রপথের নিরাপত্তা জোরদার করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
পাঁচ দিনের ইজ়রায়েল সফরে গিয়েছেন জয়শঙ্কর। বৈঠকে তিনি এবং ইজ়রায়েলের বিদেশমন্ত্রী ইয়ের লাপিড বসেছিলেন পাশাপাশি। আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রী শেখ আবদুল্লা বিন জ়ায়েদ আল নাহয়ান বৈঠকে যোগ দেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। জয়শঙ্কর টুইটারে লেখেন, ‘‘প্রথম বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও নিবিড় ভাবে কাজ করার বিষয়ে কথা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপগুলি দ্রুত করার বিষয়েও সহমত হয়েছি।’’
বৈঠকে জয়শঙ্কর অন্য তিন বিদেশমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক যাঁদের রয়েছে, আপনারা তাঁদের অন্যতম।’’ ব্লিঙ্কেন বলেন, কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো বিষয়ের নিরিখে তিনটি আলাদা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বদলে এই ধরনের সমবেত মঞ্চ অনেক বেশি কার্যকরী। তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে, বর্তমান সময়ে যে বিষয়গুলি বড় হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে আমাদের ভাবনা একই রকমের। এখন আমরা কিছু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে যদি একমত হতে পারি, তা হলেই লাভ হবে।’’
আমেরিকান বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নেড প্রাইস পরে বলেন, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তন, শক্তি ক্ষেত্র, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং কোভিড মোকাবিলার নিরিখে বিশ্বের জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে এই বৈঠকে। ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘‘বন্ধুদের নতুন ভাবে কাছাকাছি নিয়ে আসছি আমরা। ওয়াশিংটনে বসেই বলতে পারি, ভারত, ইজ়রায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিন কৌশলগত সহযোগী।’’
একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে ঐক্যের উপরে জোর দেন ইজ়রায়েলের বিদেশমন্ত্রী লাপিড। আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রী নাহয়ান বলেন, ‘‘জয়শঙ্কর পুরনো বন্ধু। ভারত ও আমিরশাহির সম্পর্ক দৃঢ় ও বহুমুখী।’’ প্রসঙ্গত, পারস্পরিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ২০২০-র অগস্টে আব্রাহাম চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইজ়রায়েল এবং আমিরশাহি। তাকে স্বাগত জানিয়েছিল ভারতও। বৈঠকে ব্লিঙ্কেন জানান, জো বাইডেন প্রশাসন ওই চুক্তির পাশে রয়েছে।
আফগানিস্তানে তালিবানের উত্থানের পরে সংবেদনশীল হয়ে রয়েছে এশিয়ার পরিস্থিতি। উপরন্তু চিনের সক্রিয়তা ভারত ও আমেরিকা, দুই দেশের পক্ষেই উদ্বেগের। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘কোয়াড’ গোষ্ঠীর মাধ্যমে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের বাড়বাড়ন্ত রুখতে আগেই সক্রিয় হয়েছে আমেরিকা। কোয়াডে ভারতও রয়েছে। এ বার ইজ়রায়েল ও আমিরশাহির সঙ্গে
নতুন এই মঞ্চে এল ভারত। ফলে পশ্চিম এশিয়ার কূটনীতিতেও বাইডেন প্রশাসনের কাছে ভারতের গুরুত্ব বাড়তে চলেছে বলে অনেকে মনে করছেন।